সুদীপ ব্যানার্জী, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের ভারত -ভুটান সীমান্ত জয়গাঁর অবৈধ জমি দখলমুক্ত করতে তৎপর জেলা প্রশাসন। শুধুমাত্র এশিয়ান হাইওয়ের পাশের জমি দখলই নয়, এলাকার জমি মাফিয়ারা বন দপ্তরের হাতির করিডর পর্যন্ত দখল করে জমি কেনাবেচার অবৈধ ব্যবসা শুরু করেছে। একসময় এশিয়ান হাইওয়ে হাসিমারার কাছে ১০ নম্বর এলাকায় বন দপ্তরের লেখা এলিফ্যান্ট করিডরের বোর্ড ঝোলানো ছিল। দুষ্কৃতীরা সরকারি বোর্ড উপড়ে ফেলে দিয়ে সম্পূর্ণ এলিফ্যান্ট করিডর নিজেদের দখলে নেয়। মঙ্গলবার জমি দখলমুক্ত করতে আসরে নামে কালচিনি ব্লক প্রশাসন, জয়গাঁ থানা ও হাসিমারা ফাঁড়ির পুলিশ।
ব্লক ভূমি দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী,ওই এলাকার জমি পূর্ত ও বন দপ্তরের। কিছু অংশ জমি রেল দপ্তরের হলেও ওই জমির পরিমাণ সামান্য। মঙ্গলবার এলাকার কিছু অস্থায়ী নির্মাণ জয়গাঁ থানার পুলিশ ভেঙে দেয়। বুধবার আসরে নামে কালচিনি ব্লক প্রশাসন। কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, “বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ছাড়াও কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এশিয়ান হাইওয়ের পাশে হাসিমারা থেকে দলসিংপাড়া হয়ে জয়গাঁর জিএসটি মোড় পর্যন্ত সরকারি জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ শুরু করেছিল। ভূমি দপ্তর জমির মাপজোক শুরু করেছে ইতিমধ্যে। রাজ্য সরকারের জমি আমরা দখলমুক্ত করা শুরু করেছি।“ তিনি জানান, ওই জমির ওপর সরকারি বোর্ড বসানো হবে। এছাড়াও জমি দখল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অবৈধ কাজ রুখতে এশিয়ান হাইওয়ে ১০ নম্বর এলাকায় একটি নতুন পুলিশ চৌকি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্লক প্রশাসন।এদিন সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে বিরাট পুলিশবাহিনী নিয়ে ওই এলাকায় উপস্থিত হন জয়গাঁর এসডিপিও এলটি ভুটিয়া, জয়গাঁ থানার ওসি অভিষেক ভট্টাচার্য, হাসিমারা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সৌভিক মজুমদার। এছাড়াও ব্লক প্রশাসনের তরফে উপস্থিত হন কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন, ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক শিরোপ শেরপা সহ অন্য আধিকারিকরা। সূত্রের পাওয়া খবর অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এলাকায় জমি কেনাবেচার যে একটি বড় চক্র কাজ করছে সেটাও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ওই এলাকা সংলগ্ন ভার্নাবাড়ি ও বিচ চা বাগানের কিছু চা শ্রমিক ওই জমিতে চাষ আবাদ করতেন। হাসিমারা ও দলসিংপাড়া সহ জয়গাঁর কিছু বাসিন্দা ওই শ্রমিকদের কাছ থেকে অল্প দামে জমি কিনে খুঁটি পুঁতে ও অস্থাযী ঘর বানিয়ে জমি নিজের দখলে রাখতেন। ভালো খদ্দের পেলে মোটা টাকার বিনিময়ে শুধু মাত্র স্ট্যাম্প পেপারে লিখে জমির মালিকানা হস্তান্তর হত। হাসিমারা এলাকার এক ব্যবসাযী বলেন, এক মাস আগে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে ওই এলাকায় কিছুটা জমি কিনেছিলাম। এক মাসের মধ্যে ওই জমি বিক্রির জন্য ৬ লক্ষ টাকার খদ্দের পেয়েছিলাম। অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি দখলের জমি অন্তত ৫০০ জন ক্রেতা কিনেছেন অথবা দখল করে রেখেছেন।