দ্বিগবিজয় মাহালীঃ গরম বাড়তেই জলকষ্ট শুরু। পান করতে বাধ্য হচ্ছেন পুকুর বা কুঁয়োর ঘোলা জল। সকাল হলেই গ্রামের মানুষজন এক কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে চলে যান জল আনতে ওই পুকুর বা কুঁয়োতে। দেরি হলে কুঁয়োর জল মেলে না। পুকুরের জল আরও ঘোলা হয়ে যায়। ওই দূষিত জল পান করে দিন কাটছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের তামাকবাড়ি এলাকার চল্লিশটি আদিবাসী পরিবারের। পাঁচ মাস ধরে এই দুর্ভোগে বাড়ছে ক্ষোভ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, 'আদিবাসী বলেই তাদের সমস্যাগুলি সমাধান করছে না পঞ্চায়েত প্রশাসন।' জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় সরকারী ভাবে একটি সাবমার্শিবল ছিল। গত পাঁচ থেকে ছয় মাস হল খারাপ হয়ে রয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানকে বারবার জানালেও সারানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অথচ মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তুলসী মুর্ম্মুও ওই গ্রামের। এই কষ্টের শিকার তিনি নিজেও। তুলসী দেবী বলেন, পঞ্চায়েতে বারবার জানানো হলেও কোনো গুরুত্বই দেয়নি। দূষিত জল পান করায় ডায়রিয়া থেকে শুরু করে নানারকম পেটের অসুখে ভুগছেন তারা। এমনকি এলাকায় থাকা শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে জলের জন্য। জঙ্গল ঘেরা আদিবাসী গ্রামের এই ঘটনায় সরব বিরোধীরা। দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা দেওয়ার দাবি তুলেছে বিজেপি, এসইউসিআই। স্থানীয় বাসিন্দা ধনঞ্জয় হাঁসদা, অজয় কিস্কু নারান হেমরমরা বলেন, প্রায় দিন পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে জানানো হয় টেন্ডার হয়ে গেছে নতুন করে তৈরি হয়ে যাবে। এভাবেই পাঁচ থেকে ছয় মাস কেটে গিয়েছে। এর আগে দূরে জমিগুলোতে সেচের জলের জন্য মেশিন চলত। সেখান থেকেই জল নিয়ে পান করতেন তারা। এখন ধান পেকে গিয়েছে, ফলে জমিতে জল দেওয়ার জন্য আর চলে না মেশিন। ফলে জল না পেয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে ওই আদিবাসী পরিবারগুলোর। মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অঞ্জলি সরেন বলেন, ওখানে একটি সাবমার্শিবল দেওয়া হয়েছিল, ওরা পানীয় জল ছাড়াও জমিতে সেচের কাজে ব্যবহার করেছে। যে কারণে খারাপ হয়ে গিয়েছে। তবে নতুন করে সারানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।