নিউজ ডেস্ক, ঝাড়গ্রামঃ ফসলের ক্ষতিপূরণ ও হাতির দল অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পথ অবরোধ শুরু করেছে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের দুধকুন্ডি এলাকার বাসিন্দারা। সাঁকরাইল ব্লকের দুধকুন্ডি গ্রাম খড়গপুর বনবিভাগের কলাইকুন্ডা রেঞ্জের অন্তর্গত। জানা গিয়েছে, দুধকুন্ডি এলাকায় জঙ্গল থাকায় মাঝেমধ্যেই হাতির দল হানা দেয় সেখানে। কিন্তু এবার ১১ দিন ধরে ১০টি হাতির একটি দল দুধকুন্ডির জঙ্গলে রয়েছে। দুধকুন্ডি, বিন্নি গোবিন্দপুর, হাড়িভাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন রাত হলেই খাবারের খোঁজে ধানের জমিতে হানা দিচ্ছে হাতির দলটি। ধান খাওয়ার পাশাপাশি করোলা, ভেন্ডি সহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে হানা দিয়ে ব্যাপক ফসলের ক্ষতি করছে হাতির দলটি। হাতিগুলোকে অন্যত্র সরানোর জন্য বন দফতরকে জানানো হলেও বন দফতর থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছে গ্রামবাসীরা। এমনকি হাতির দ্বারা ক্ষতির কোনও ক্ষতিপূরণও বন দফতর থেকে পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাত্রে কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বাগমারির দিক থেকে প্রায় ৫০ টি হাতির একটি দল ঢুকে পড়েছে দুধকুন্ডির জঙ্গলে। বর্তমানে হাতির দল ২ টি প্রতিদিন রাত হলেই খাবারের খোঁজে ফসলের জমিতে নেমে পড়ছে। যার ফলে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। বন দফতরকে বহুবার জানিও কোনও সদুত্তর না পেয়ে বাধ্য হয়ে এদিন সকাল ৮ টা থেকে দুধকুন্ডি এলাকায় পথ অবরোধ শুরু করেন দুধকুন্ডি গ্রামের বাসিন্দারা। পথ অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাঁকরাইল থানার পুলিশ। পুলিশ পথ অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের অনুরোধ করলে গ্রামবাসীরা জানান বন দফতর সেখানে গিয়ে সম্পূর্ণ ঘটনার সুরাহা না করা পর্যন্ত পথ অবরোধ চলবে। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন দফতরের কর্মীরা। হাতির সমস্যা নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন বন দফতরের কর্মীরা। দুধকুন্ডি গ্রামের বাসিন্দা পরিমল মাহাতো বলেন, "দুধকুন্ডিতে জঙ্গল থাকায় প্রায়ই হাতি আসে কিন্তু একদিন পরে হাতি গুলি চলে যায় সেরকম কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় না। কিন্তু ১১ দিন আগে থেকে এখানে ৫০ থেকে ৫৫ টি হাতির একটি দল রয়েছে যা অন্য কোথাও যাচ্ছে না। প্রতিদিন রাত হলেই খাবারের খোঁজে ধান জমিতে হানা দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০০ থেকে ৭০৯ বিঘার ফসল নষ্ট করেছে"। তিনি আরও বলেন, "দুধকুন্ডির জঙ্গল থেকে হাতিগুলোকে অন্যত্র যেতে দিচ্ছে না বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। হাতি অন্যত্র যাওয়ার চেষ্টা করলেই বোম ফাটিয়ে, হুলা দেখিয়ে হাতি গুলিকে আবার এই জঙ্গলে ফিরিয়ে দিচ্ছে। বন দফতরকে জানানো হলেও তাদের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই এই বিষয়ে। তাই বাধ্য হয়ে পথ অবরোধ করা হয়েছে। ফসলের ক্ষতিপূরণ ও হাতিগুলোকে অন্যত্র সরানো হলে এই পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হবে"। এই বিষয়ে বন দফতরের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।