শুভেন্দুর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দুই তৃণমূল নেতা

দিগবিজয় মাহালি, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের জন্য তৈরি বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের দুই তৃণমূল নেতা,যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। জানা যায়,বর্তমানে তৃণমূলের এই দুই নেতার একজন তৃণমূলের উপপ্রধান ও আর একজন যুব নেতা সাথে তমলুক ঘাটাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সম্পাদক পদে রয়েছেন। "শুভেন্দু প্রেমে আসক্ত আমরা" এই নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে যা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কেন্দ্র করে তৈরি। এই গ্রুপে এডমিন রয়েছেন খোদ বিরোধী দলনেতা। আর সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রয়েছেন দাসপুরের তৃণমূল পরিচালিত বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা দাসপুর ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধরন সম্পাদক কাজল সামন্ত ও দাসপুরের তৃণমূলের যুব নেতা কৌশিক কুলভী। কৌশিক বাবু তমলুক ঘাটাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির সম্পাদক পদেও রয়েছেন। বিজেপির একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ যেখানে খোদ শুভেন্দু অধিকারী এডমিন রয়েছেন সেই গ্রুপে দাসপুরের তৃণমূলের দুই নেতার উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এ বিষয়ে দাসপুর ১ ব্লকের বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, "বিষয়টি জানতাম না আপনাদের থেকেই শুনলাম। গ্রুপে যে নম্বরের কথা বলছেন সেটি উপপ্রধান কাজল সামন্তর।দলে থেকে বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা যেখানে খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রয়েছে এটা বাঞ্ছনীয় নয়। আমি বিষয়টি ব্লক ও জেলা নেতৃত্বকে জানাব।" দাসপুর ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সদস্য তথা ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি সেখ গোলাম মোর্তাজা এই ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, "উপপ্রধান কাজল সামন্ত ও কৌশিক কুলভী দুজনেই বিজেপি ও শুভেন্দুর সাথে যুক্ত। ২০১৯ লোকসভার আগে থেকেই শুভেন্দুর সাথে যুক্ত ওঁরা, ওঁদের বিরুদ্ধে অনেকের ক্ষোভ রয়েছে। ওঁদের বিরুদ্ধে ব্লক জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে ব্লকের পদাধিকারীরা সবাই সই করে নবান্ন পর্যন্ত যাবে। এসব আমরা সমর্থন করি না, বিগত লোকসভার আগে থেকেই ওঁরা বিজেপির হাওয়া বুঝে দুবছর দলের কাজে যুক্ত হয়নি।একুশে তৃণমূল কংগ্রেস পুনরায় ক্ষমতায় আসায় ওঁরা ফের তৃণমূলে ভিড়ে, তলে তলে ওঁরা বিজেপি করে এবং শুভেন্দুর অনুগামী।"  যে দুই তৃণমূল নেতার বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা নিয়ে তরজা তাদের একজন তথা বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কাজল সামন্ত'র সাফাই, "আগে শুভেন্দু অধিকারীর সাথে যোগাযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনও সম্পর্কই নেই আর গ্রুপে থাকলেও আমি কোনও ম্যাসেজ করিনা।আগে হয়তো ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রয়ে গিয়েছিলাম জানতাম না জানলাম এবার বেরিয়ে যাব।" এবিষয়ে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, "২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু ২০২২ সাল পড়তেই তৃণমূলের অবস্থা খারাপ।সেদিক দিয়ে তৃণমূলের অনেকেই বিজেপির সাথে যোগাযোগ করে চলছে তবে দু নৌকায় পা দিয়ে চললে হবেনা ভালো সংগঠক হলে তাদের স্বাগত।কিন্তু দু নৌকায় পা দিয়ে কেউ চললে তা নিয়ে আমরা দাদাকেও জানাব এবং রাজ্য নেতৃত্বকেও জানাব।" এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে কেন্দ্র করে এখন দাসপুরে জোর রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে।