দ্বিগবিজয় মাহালীঃ এবার ভয়াবহ ডাকাতি মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে বিদ্যাসাগরপল্লী এলাকায়। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার ভোররাতে। প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জনের সশস্ত্র ডাকাতের দলটি জানালা কেটে ঢুকে পড়ে গৃহস্থের বাড়িতে। অস্ত্র দেখিয়ে সকলকে কোণঠাসা করে চলে ডাকাতি। এতে পরিবারের এক সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়লে জলের গ্লাস নিয়ে এগিয়ে এসে তাকে সুশ্রুষাতে সহযোগিতা করে । তবে বাড়ি থেকে সোনার গহনা ও নগদ টাকা মিলিয়ে প্রায় ৮ লক্ষ টাকার সামগ্রী ডাকাতি করে নিয়ে যায় তারা। যাওয়ার আগে ছাড়িয়ে নেওয়া মোবাইল গুলি বাড়ির বাইরে একটি স্থানে রেখে বেরিয়ে যায় ডাকাতের দল। জানা গিয়েছে, বিদ্যাসাগর পল্লী এলাকায় নতুন বাড়ি তৈরি করে প্রায় এক বছর ধরে বসবাস করছেন ঝাড়গ্রাম জেলার শিক্ষা দপ্তরের বিদ্যালয় পরিদর্শক অমরেশ কর। বাড়িতে দুই ছেলেমেয়ে স্ত্রী নিয়ে বসবাস করতেন। শুক্রবার রাতে হঠাৎ তিনটে নাগাদ ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে দেখেন তার গলাতে একটি ধারালো অস্ত্র ধরে ডাকাতের দল। ডাকাত দল দাবি করে, বাড়িতে রাখা ৫০ লক্ষ টাকা তাড়াতাড়ি দিয়ে দাও। সোনার গহনা বা সামগ্রী যা রয়েছে দাও। অমরেশ বাবু জানান, আমার কাছে ওরকম কোন টাকা নেই। সদ্য বাড়ি তৈরি করে হাত খালি হয়ে গিয়েছে। এই কথোপকথনের মাঝে পাশের রুমে ঘুমিয়ে থাকা অমরেশ বাবুর স্ত্রী সুচিত্রা কর বেরিয়ে এসে দেখার চেষ্টা করেন কি হয়েছে। তখনই সকলকেই জোর করে সোফাতে বসিয়ে দেন ডাকাতের দল। অস্ত্র দেখিয়ে তাদের জোর করে বসিয়ে রেখে বাড়িতে থাকা সমস্ত আলমারি ও ড্রয়ার তছনছ করে তল্লাশি চালাতে থাকে। বাড়ির বিভিন্ন স্থান থেকে লুকিয়ে রাখা প্রায় ১৬ ভরি সোনার গহনা, পাওয়া সোনার মেডেল, নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় তারা।
অমরেশ বাবু বলেন, "এই ধরনের ঘটনা ঘটবে বুঝতে পারিনি। অতর্কিত ভাবে ডাকাতদল প্রবেশ করে সমস্ত কিছু লুট করে নিয়ে গিয়েছে। ডাকাতির শুরুতে ছাড়িয়ে নেওয়া মোবাইল গুলি যাওয়ার সময় বাড়ির সামনে রেখে গিয়েছে তারা। ঘটনায় চরম আতঙ্কে রয়েছি আমরা" অমরেশ বাবুর স্ত্রী সুচিত্রা কর বলেন, "ডাকাতের দল প্রায় এক ঘন্টা ধরে আমাদের বাড়িতে এই ডাকাতির কাণ্ডটি করেছে। ওই সময় আমার স্বামী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন ওই ডাকাতের দলই জলের গ্লাস নিয়ে এগিয়ে দেন আমাদের দিকে। খানিকটা সহযোগিতা করেন সুস্থ করার ক্ষেত্রে। আমাদের শারীরিক ভাবে কোন হেনস্থা করেনি। কিন্তু বাড়িতে কোন জিনিস রাখল না তারা। কোথাও একটা সন্ধান পেয়ে ছিল আমাদের বাড়িতে ৫০লক্ষ টাকা রয়েছে। সেই টাকা না পেয়ে নিজের মধ্যে হিন্দিতে বলাবলি করতে থাকে যে এই তথ্যটা দিয়েছিল তাকে গিয়ে ধরবো চলো।" ঘটনার খবর পেয়ে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ শুক্রবার সকাল থেকেই তদন্ত শুরু করে। ডাকাত দলের আসা-যাওয়ার সম্ভাব্য রাস্তাগুলি দেখার সাথে সাথে পুরো বাড়ি ঘুরে দেখে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ।