নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ভালো নম্বর তুলতে তো সবাই চাইবে। তবে সকলের ভীতি থাকে 'অঙ্ক' নামক বিষয়টির ওপরে। তাই এবার জেনে নাও অঙ্কে ভালো নম্বর পাওয়ার চাবিকাঠি। ২০২২ সালে অঙ্কের সিলেবাসের মধ্যে রয়েছে পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, পরিমিতি। ৯০ নম্বরের পরীক্ষায় এই কয়টি বিষয়কেই এবারে রাখা হয়েছে। ত্রিকোণমিতি, রাশিবিজ্ঞানকে বাদ রাখা হয়েছে। মনে রাখতে হবে ৩৬ নম্বরের অবজেক্টিভ প্রশ্ন থাকবে,যার মধ্যে এমসিকিউ (MCQ) ৬টি, ফিল ইন দ্য ব্ল্যাঙ্ক ৫টি, সত্য/মিথ্যা ৫টি এবং একাধিক ছোট প্রশ্নও থাকবে। তাই অঙ্ক পরীক্ষায় নম্বর তুলতে ছোটপ্রশ্নের এই অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে মনে রাখতে হবে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে মূলধাপগুলি সংক্ষেপে করে দেখাতে হবে। অঙ্ক করার প্রয়োজনে যাবতীয় রাফ ওয়ার্ক লাইন টেনে খাতার ডানদিকে করতে হবে। পাটিগণিতে মোট ১০ নম্বর থাকবে। তাই পাটিগণিতের অঙ্কের প্রতিটি ধাপ স্পষ্ট করে দেখাতে হবে। ধাপ সব গুলি না দেখালে নম্বর কাঁটা যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে চক্রবৃদ্ধি সুদ/সমহার বৃদ্ধির অঙ্ক করার সময় যাবতীয় গণনার কাজ সাবধানে করতে হবে, কারণ এই অঙ্কে অধিকাংশ নম্বর গণনার ওপরই নির্ভর করছে। বীজগণিতে থাকবে ১৫ নম্বর। ৩×২+৩×২+৩×১=১৫ এই ভাগে প্রশ্নগুলি থাকবে। এক্ষেত্রেও খুব সহজেই ছাত্র,ছাত্রীরা নম্বর তুলতে পারবে। তবে মনে রাখতে হবে,সমীকরণ সমাধানের অঙ্ক করার সময় প্রতিটি ধাপে বামদিকে “বা/or” লিখতে হবে। পরিমিতিতে ৪×৪ ভাগে ১৬ নম্বর থাকবে। প্রতিটা অধ্যায়ই ত্রিমাত্রিক ঘনবস্তুকে নিয়ে। অঙ্কের প্রয়োজনে ছবি আঁকতে হলে ছবির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আগে দিয়ে দিতে হবে। কোনওভাবেই সঠিক একক লিখতে যেন ভুল না হয়। প্রশ্নে একই রাশির বিভিন্ন একক থাকলে খেয়াল করে যেকোনও একটি একক (যা চাওয়া হয়েছে বা যেটি সুবিধাজনক) নিয়ে অঙ্কটি কষতে হবে। জ্যামিতির উপপাদ্য থেকে ৫+৩ =৮ নম্বর থাকবে। অর্থাৎ একটি উপপাদ্য ও একটি প্রয়োগ। উপপাদ্য সিলেবাসের মধ্যে থেকেই আসবে। তাই একটু ভাল করে উপপাদ্যগুলি বই থেকে তৈরি করলে খুব সহজেই পুরো নম্বর পাওয়া যাবে। উপপাদ্য লেখার সময় যা যা খেয়াল রাখতে হবে: ১. চিত্র যেন অবশ্যই থাকে। সেটা পেনসিল দিয়ে আঁকতে হবে। ২.যদি প্রশ্নে নামকরণ করে দেওয়া না থাকে তাহলে নিজেদের মত করে নামকরণ করে সেই অনুযায়ী লিখতে হবে। প্রশ্নে নামকরণ করে দেওয়া থাকলে অবশ্যই সেই নাম দিয়ে চিত্র অঙ্কন করতে হবে ও সেই অনুযায়ী উপপাদ্যটি লিখতে হবে। ৩.সাধারণ ও বিশেষ নির্বচন,প্রামাণ্যবিষয়,অঙ্কন,প্রমাণ যথাযথ ক্রমে লিখতে হবে। এর সঙ্গেই ৫ নম্বরের একটি সম্পাদ্য করতে হয়। সম্পাদ্যের প্রশ্নে দেওয়া মাপ অনুসরণ করে পেনসিল দিয়ে আঁকতে হবে। ৪. যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে অঙ্কন করতে হবে। অঙ্কন শেষে অঙ্কনচিহ্ন দিলেই হবে। মধ্যসমানুপাতি অঙ্কনের ক্ষেত্রে উত্তর লেখার সময় মধ্যসমানুপাতীর দৈর্ঘ্যেরএকক লিখতে হবে, কিন্তু একই অঙ্কনপদ্ধতি অনুসরণ করে বাস্তবসংখ্যার বর্গমূল নির্ণয় করতে হলে উত্তরে বাস্তব সংখ্যার বর্গমূলের মানের কোনও একক থাকবে না। এর সাথে আরও মাথায় রাখতে হবে। যেমনঃ- ১. উপপাদ্য ও সম্পাদ্য আলাদা আলাদা ভাবে উত্তরপত্রের একটা পাতায় করলে ভাল। ২. সরকারি গণিতবইয়ের প্রতিটা উদাহরণের অঙ্ক,অনুশীলনীর অঙ্ক ভাল করে অনুশীলন করতে হবে। ৩. সম্পূর্ণ উত্তরপত্র পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ৪. Objective প্রশ্নের উত্তর প্রথম দিকে করতে পারলে ভাল। ৫. পরীক্ষার শুরুতেই যেহেতু প্রশ্নপত্র পড়ার আলাদা সময় থাকছে, তাই পরীক্ষার্থীরা খুব ভালভাবে প্রশ্ন পড়ে দেখে নেবে কোন অঙ্কগুলো বিনাবাধায় খুব সহজেই করতে পারবে। ৬. সেই অঙ্কগুলো শুরুতেই করে নেবে। তারপর যে অঙ্কগুলো একটু চেষ্টা করে করতে হবে সেগুলো করবে। ৭. কোনও অঙ্ক করতে সমস্যা হলে তার জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যয় না করে তার বিকল্প প্রশ্ন বা অন্য প্রশ্নের উত্তর করা উচিত। তাহলে সময়ের অপচয় হবে না এবং তার জন্য অকারণে মানসিক চাপও তৈরি হবে না। ৮. যদি কোনও অঙ্ক অসমাপ্ত থাকে তাহলে কখনও সেটা শেষ করতে না পারার জন্য কেটে দেবে না। ৯. সকল পরীক্ষার্থীরা চেষ্টা করবে পরীক্ষা শেষে কিছুটা সময় (কমপক্ষে ১৫/২০ মিনিট) রিভিশনের জন্য রাখতে, যাতে অঙ্ক করতে কোনও ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করতে হবে। গণিত একটি logical subject, তাই সঠিক পদ্ধতি ও ধাপ অনুসরণ করে অঙ্ক করলেই পুরো নম্বর পাওয়া সম্ভব। নির্ভয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে শরীর সুস্থ রেখে অঙ্ক পরীক্ষা দিলে সাফল্য মিলবেই।
মাধ্যমিকে অঙ্কে ভালো ফল করার কৌশল
New Update