নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য আগে জেনে নেওয়া দরকার কিছু মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। পরীক্ষার খাতাকে পরীক্ষকের সামনে এক সুন্দর ছবির মতো তুলে ধরতে হবে। যাতে তার খাতা দেখতে এবং নম্বর বসাতে সুবিধা হয়। ছোটখাটো ভুল অনেক নম্বর কমাতে পারে। তাই ভালো পরীক্ষা দিলেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়না। জেনে নিই কিছু কৌশলঃ-
ক. খাতায় কালো, নীল এবং ক্ষেত্রবিশেষে পেনসিল ছাড়া আর কোনো কালির দাগ থাকবে না। অনেকে সবুজ, বেগুনি, গোলাপি রং ব্যবহার করেন, যা ঠিক নয়।
খ. খাতাটি পেয়ে রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ তথ্যাদি পূরণ করে মার্জিন টেনে ফেলবেন। অবশ্যই 'বক্স স্কেলিং' নয়। কারণ, এতে লেখার জায়গাটা অনেক ছোট হয়ে আসে। ওপরে এবং বাঁ পাশে এক ইঞ্চি রেখে দাগ টানতে হবে। এই স্কেলিং করবেন নীল কালি দিয়ে।
গ. লুজ শিটে সময় না থাকলে মার্জিন করার প্রয়োজন নেই। শুধু ওপরে এবং বাঁয়ে ভাঁজ করে নিন।
ঘ. লুজ শিট নিলে তার নম্বরটি প্রথমেই মূল খাতার যথাস্থানে পূরণ করে নিন। পরে করলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে ।
ঙ.সময় থাকতেই দ্রুত গতিতে লিখতে হবে। কেননা, পরে সময় কম হয়ে গেলে লেখার ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে।
চ. পয়েন্ট, কোটেশন ও রেফারেন্স নীল কালি দিয়ে লিখবেন এবং কালো কালি দিয়ে আন্ডারলাইন করে দেবেন। এতে পরীক্ষক সহজেই এটি চোখে পড়বে।
ছ.সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আবশ্যক। উত্তরের পরিমাণ কম হলেও, প্রশ্ন ছেড়ে আশা উচিত নয়। বিষয়টি সম্পর্কে জানা না থাকলেও অন্তত আন্দাজে দু লাইন লিখতেই হবে।
জ. চেষ্টা করবেন প্রশ্নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে উত্তর দিতে। এতে খাতা দেখতে সুবিধা হয় এবং নম্বরও ভালো আসার সুযোগ থাকে।
ঝ. টু দ্য পয়েন্টের উত্তরগুলো আগে দেওয়া ভালো। যেমন ব্যাকরণের উত্তর, চিঠিপত্র, ছোট প্রশ্ন, টীকা। তারপর বর্ণনামূলক লেখা ভালো। এতে গুছিয়ে লেখা যাবে।
ঞ. অসম্পূর্ণ উত্তরের ক্ষেত্রে বাংলার বেলায় 'অ. পৃ. দ্র.' এবং ইংরেজির বেলায় 'To be continued' লেখা ভাল।
ট. নতুন প্রশ্ন নতুন পৃষ্ঠা থেকে শুরু করা ভালো। তবে গুচ্ছ প্রশ্নের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।
ঠ. বিজ্ঞান এবং ভূগোল ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে চিত্রের প্রয়োজন নেই। সেগুলিতে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়াই আবশ্যক।
ড. চিঠিপত্র লেখার সময় বাঁ পাশের পৃষ্ঠা থেকে শুরু করাই ভালো এবং দুই পৃষ্ঠায় শেষ করতে হবে।
ঢ. মার্জিনের বাইরে কোনো লেখা হবে না। প্রশ্নের নম্বর ও কত নম্বর প্রশ্নের উত্তর লিখছেন তাও লেখা যাবে না।
ণ. অনাবশ্যকভাবে পৃষ্ঠা ভরবেন না। পৃষ্ঠা গুনে নম্বর হয় না। যা চেয়েছে ও যা জানেন, তা সময়ের সঙ্গে মিল রেখে লিখুন।
ত. যথাসম্ভব কাটাকাটি করবেন না। এতে খাতার সৌন্দর্য নষ্ট হয়। কাটাকাটির পরিমাণ যত সম্ভব কম করলেই ভালো। থ. টীকা লেখার সময় প্রথমে হালকা ভূমিকার মতো করে লিখতে হবে এবং শেষে একটা উপসংহার থাকবে। মাঝখানে যা জানতে চেয়েছে তা অল্প করে লিখে দেবেন।
দ. যেসব প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে শব্দ নির্ধারিত থাকবে, তা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না। যেমন ইংরেজি রচনা। এ জন্য পরীক্ষার হলে গুনতে বসবেন না। বাড়িতে এক পৃষ্ঠা দ্রুত লিখে দেখবেন কত শব্দ হয়। সেই সংখ্যা দিয়ে নির্ধারিত সংখ্যাকে ভাগ দিলে পৃষ্ঠা পেয়ে যাবেন।
ধ. ৫ নম্বরের একটা প্রশ্নের উত্তর সর্বোচ্চ ২ পৃষ্ঠা হতে পারে। এর বেশি লেখার অনেক ক্ষেত্রেই সময় পাবেন না।
ন. এক কথায় যেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, তা যত সংক্ষেপে লেখা যায় ততই ভালো।
প. ইংরেজি ও বাংলা রচনা শেষে লেখাই ভালো। কারণ, তা সর্বাধিক নম্বর বহন করে।
ফ. শূন্যস্থান পূরণের ক্ষেত্রে যদি নম্বর না থেকে প্যাসেজ থাকে, তবে পুরোটা তুলতে হবে। আর শূন্যস্থান এর নিচে নীল কালি দিয়ে আন্ডারলাইন করে দিতে হবে, যাতে পরীক্ষকের সহজে চোখে পড়ে। ব. লেখার সময় বানান ভুল হচ্ছে কি না মাথায় রাখবেন। যতটা সম্ভব সঠিক বানান লেখা আবশ্যক।
ব.যেকোনো চিত্র পেনসিল দিয়ে আঁকবেন। 'ফ্রিহ্যান্ডে' আঁকাই ভালো।
ভ. বর্ণনামূলক প্রশ্নে পারলে ছক দিয়ে তথ্য উপস্থাপন করবেন। ছকটা তৈরি করবেন নীল কালিতে আর লিখবেন কালো কালিতে। এতে পরীক্ষক সহজে বুঝতে পারবেন।
ম.'জেল' জাতীয় কালির কলম ব্যবহার না করাই ভালো। এতে কালি 'ব্লট' করে অন্য পৃষ্ঠাও নষ্ট হয়ে যায়।
য. ভুলক্রমে যদি কোনো পৃষ্ঠা রেখে পরবর্তী পৃষ্ঠায় লিখে ফেলেন, তবে ফাঁকা পৃষ্ঠায় একটা দাগ টেনে দেবেন। এতে পরীক্ষকের বুঝতে সুবিধা হবে।
র. প্রতিটি নম্বরের জন্য কত সময় পান, তা আগেই হিসাব করে রাখবেন এবং সেই পরিমাণ সময় তাতে ব্যয় করবেন। যদি বরাদ্দকৃত সময় কিছু বেঁচে যায়, তবে তা পরবর্তী কোনো প্রশ্নে ব্যবহার করতে পারেন। ল. সাধারণ গণিতের উত্তর শেষ হলে একটু রিভিশন দেবেন। অনেকেরই প্লাস, মাইনাস বা ছোটখাটো ভুল করার অভ্যাস আছে। শ. বাড়িতে ঘড়ি ধরে লেখার অভ্যেস করতে হবে।