বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে বৃক্ষছেদন গড়বেতায়

author-image
Harmeet
আপডেট করা হয়েছে
New Update
বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে বৃক্ষছেদন গড়বেতায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুরঃ বনদফতরের অনুমতি না নিয়েই নির্বিচারে বৃক্ষছেদনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কড়সা এলাকায়। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কংসাবতী ক্যানেলের পাশে ৪৫০০ টি ইউক্যালিপ্টাস গাছ রয়েছে। যা কড়সা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছিল। গত ২০০২ সালে প্রথমবার গাছ কাটা হয়। ২০২২-এ পুনরায় সেই গাছ কাটার প্রক্রিয়া শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত। সেইমতো বনদফতরের অনুমতি চান তারা। কংসাবতীর ক্যানেলের বাইরে থাকা ৪৫৯ এবং ৪৬০ এই দুটি দাগের মধ্যে থাকা ২৭০ টি গাছের অনুমতি দিয়েছে বন দফতর। বাকি গাছ কাটার অনুমতি দেয়নি। তার বাইরে থাকা বাকি গাছগুলোও কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। বন দফতরের অনুমতি ছাড়া গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ গড়বেতা ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে জানিয়েছেন বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গৌতম কৌড়ি। তারপরেও  গাছ কাটা বন্ধ হয়নি। ওই ৪৫০০ টি গাছের আনুমানিক সরকারি মূল্য ৩৫ লক্ষ টাকা। বিজেপির এক জেলা নেতা বলেন, 'দিদির ভাইয়েরা ওই টাকা লুটপাট করতে অনুমতি না নিয়ে বৃক্ষছেদন করছে।' মেদিনীপুর বন বিভাগের এক আধিকারিক জানান, '২৭০টি গাছ কাটার অনুমতি রয়েছে। বাকি গাছগুলো কাটার অনুমতি নেয়। কংসাবতী ক্যানেল দফতরের অনুমতি পত্র এলে তারপর ভেবে দেখব।' অনুমতি না নিয়ে গাছ কাটা আটকাতে প্রতিদিনই ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। বাধা দিলে তাদের সঙ্গে বচসা সৃষ্টি হয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের। বিষয়টি নিয়ে গড়বেতা থানা, বিডিও অফিসে অভিযোগ জমা পড়েছে। জেলা পুলিশ ও জেলা শাসক দফতরেও অভিযোগ জমা পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। কড়সা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ইব্রাহিম খান বলেন, "২৭০ টি গাছের অনুমতি দিয়েছে বন দফতর। বাকিগুলো কংসাবতী ক্যানেলের অধীনে। কংসাবতী ক্যানেল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছে, তাই গাছগুলো কাটা হচ্ছে।" West Bengal Trees (Protection and Conservation in Non-Forest Areas) Act, 2006 বলছে, কংসাবতী ক্যানেল এলাকার গাছ হলেও, কংসাবতী ক্যানেলের আধিকারিকের লিখিত অনুমতি পত্র বন দফতরে জমা দিয়ে বন দফতরের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত কংসাবতী ক্যানেল দফতরের দেওয়া অনুমতি পত্র জমা দেয়নি বন দফতরে। যে কারণে গাছগুলো কাটতে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে বন দফতর থেকে জানা গিয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক গৌতম কৌড়ি বলেন, "তৃণমূল করলে কোনও অনুমতি লাগে না। লুট করে তাদের দল চলছে। এখানে তার বাইরে গিয়ে কিভাবে আইন মেনে অনুমতি নেবে? আইন তো শুধু সাধারণ মানুষজনের জন্য।" পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মধ্যক্ষ নেপাল সিংহ বলেন, "বিষয়টি জানা নেয়। খোঁজ নিয়ে বন দফতরকে জানাব গাছগুলোকে বাঁচানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।" তবে একসঙ্গে ৪৫০০ টি গাছ একটি এলাকায় কাটা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশ প্রেমীরাও। এর ফলে বিরূপ প্রভাব পড়বে পরিবেশে। প্রতিবছর কিছু সংখ্যক করে গাছ কাটা হোক চাইছেন স্থানীয়রাও।