নিজস্ব সংবাদদাতাঃ গ্লুকোমা এমন একটি রোগ যা অপটিক নার্ভের উপর চাপ তৈরি করে। এই চাপকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে 'ইন্ট্রাঅকিউলার প্রেশার'। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগের প্রবণতা বাড়ে। ৪০ পেরনোর পরে এই রোগের আশঙ্কা থাকে। ভারতেই ৪০ বছরের উপর বয়স এমন ব্যক্তির মধ্যে অন্তত পক্ষে ১ কোটি মানুষ গ্লুকোমায় আক্রান্ত। তবে রোগটি যে শুধু বয়স্কদেরই হয়, তা কিন্তু নয়। এটি বাচ্চাদেরও হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একে বলে 'জুভেনাইল গ্লুকোমা', যা ১০-৪০ বছর বয়সের মধ্যে হয়। এছাড়াও গ্লুকোমার আর একটি প্রকারভেদ আছে, যা হল ব। এটি খুবই মারাত্মক। এতে আক্রান্ত হয় ৩-১০ বছরের শিশুরা। গ্লুকোমা অধিকাংশ সময়েই হেরিডেটারি বা জিনগত হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে আই ড্রপ ব্যবহার করলে বা ওষুধ খেয়ে গেলেও চোখের নানা ক্ষতি হয়। তবে গ্লুকোমার ক্ষেত্রে কোনও সাবধানতা অবলম্বন করা যায় না। কেননা, জানান দিয়ে এই রোগটা আসে না। রোগ এসে দানা বাঁধলে তারপর বরং বোঝা যায়। সেই কারণেই এই রোগটিকে 'সাইলেন্ট থিফ অফ সাইট' বলা হয়ে থাকে। গ্লুকোমা সাধারণত দু'ধরনের হয়-- ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা (OAG), অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা (ACG)।
এগুলি ইন্ট্রাওকুলার প্রেসার (IOP) বা চোখের ভিতরে চাপ বৃদ্ধির দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা (OAG)ঃ ওপেন-এঙ্গেল গ্লুকোমা, গ্লুকোমার সবচেয়ে সাধারণ রূপ, সমস্ত গ্লুকোমার ক্ষেত্রে অন্তত ৯০% জন্য দায়ী এটি। এটি চোখের 'নিকাশী খালে'র ধীরগতির কারণে ঘটে। যার ফলে চোখের চাপ বেড়ে যায়। আইরিস এবং কর্নিয়ার মধ্যে একটি প্রশস্ত এবং খোলা কোণ রয়েছে যা ধীরে ধীরে বিকশিত হয় এবং একটি জীবনব্যাপী থাকে। "ওপেন-এঙ্গেল" এর অর্থ হল যে কোণটি যেখানে আইরিস কর্নিয়ার সাথে মিলিত হয় তা যতটা প্রশস্ত এবং উন্মুক্ত হওয়া উচিত। ওপেন-এঙ্গেল গ্লুকোমাকে ''প্রাইমারি বা ক্রনিক গ্লুকোমাও'' বলা হয়। এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের গ্লুকোমা।
অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা (ACG)ঃ অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা, গ্লুকোমার একটি কম সাধারণ রূপ। এটি চোখের অবরুদ্ধ নিষ্কাশন খাল দ্বারা সৃষ্ট হয়। যার ফলে হঠাৎ করে ইন্ট্রাওকুলার চাপ বৃদ্ধি পায়। আইরিস এবং কর্নিয়ার মধ্যে একটি বন্ধ বা সরু কোণ রয়েছে যা খুব দ্রুত বিকশিত হয়। এই গ্লুকোমায় আক্রান্ত হলে অবিলম্বে উপযুক্ত চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। একে তীব্র গ্লুকোমা বা ''ন্যারো-এঙ্গেল গ্লুকোমা''ও বলা হয়।