New Update
নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ নাগাদ সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ-এর (আইএনএ) প্রবীণ অফিসার, কয়েকশো তালিকাভুক্ত আইএনএ সিপাহি এবং প্রায় একশো আইএনএ-র ঝাঁসির রানি রেজিমেন্টের মহিলা সদস্য ব্রহ্মদেশের মৌলমেইন যাওয়ার জন্যে রেঙ্গুন ছাড়ে। সঙ্গে ছিলেন জাপানি-আইএনএ মৈত্রী সংস্থা হিকরি কিকন-এর প্রধান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাবুরো ইসোদা, তাদের জাপানি সেনাবাহিনীর কনভয় সিতাং নদীর ডানদিকের তীরে তাহলেও ধীরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
যা-ই হোক, খুব অল্প পরিবহনই নদী পার হতে সক্ষম হয়েছিল, কারণ তখন মার্কিন গোলা ছুটছিল। সুভাষচন্দ্র এবং তাঁর দলবল মৌলমেইন পৌঁছাবার জন্যে বাদবাকি ৮০ মাইল (১৩০ কিমি) পথ পরের সপ্তাহ জুড়ে হাঁটা দিয়েছিল।মৌলমেইন তখন ডেথ রেলপথ টার্মিনাস হয়ে গিয়েছে, যেটা আগেই ব্রিটিশ, অস্ট্রেলীয় এবং দিনেমার যুদ্ধবন্দিদের দ্বারা গড়া হয়েছে, যা বার্মাকে সিয়াম (বর্তমানে থাইল্যান্ড) পর্যন্ত যোগ করেছে। মৌলমেইনে সুভাষের বাহিনীতে আরো ৫০০ মানুষ আইএনএ-র প্রথম গেরিলা রেজিমেন্ট এক্স-রেজিমেন্ট থেকে যোগ দিয়েছে, নিম্ন বার্মার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যারা হাজির হয়েছিল।
দেড় বছর আগে, ১৬,০০০ আইএনএ সিপাহি এবং ১০০ মহিলা মালয় থেকে বার্মা প্রবেশ করেছিল। এখন, সেই সংখ্যার এক-দশমাংশ দেশ ছেড়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ চলাকালীন ব্যাংকক পৌঁছাল।বাকি নয়-দশমাংশ হয় যুদ্ধে, ইম্ফল এবং কোহিমার যুদ্ধ-পরবর্তী আঘাতে অথবা অপুষ্টিতে মারা গিয়েছে। অন্যদের ব্রিটিশরা দখল করে নিয়েছে, তাদের ঘুরিয়ে নিয়েছে, অথবা সোজা অন্তর্হিত হয়েছে।সুভাষচন্দ্র একমাসের জন্যে ব্যাংককে ছিলেন, যেখানে তিনি পৌঁছাবার অব্যবহিত পরই খবরটা শোনেন যে, ৮ মে তারিখে < জার্মানি আত্মসমর্পণ> করেছে।সুভাষচন্দ্র পরবর্তী দু-মাস অর্থাৎ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের জুন এবং জুলাই সিঙ্গাপুরে কাটিয়েছিলেন এবং দু-জায়গাতেই তিনি তাঁর সৈনিকদের বাসস্থান জোগাড় করে দেওয়ার জন্যে তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করেন অথবা যদি তারা নাগরিক জীবনে ফিরতে চায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন, যা বেশির ভাগ মহিলা করেছিলেন। সুভাষচন্দ্র তাঁর রাতের বেতার সম্প্রচারে গান্ধির বিরুদ্ধে তীব্রতা বাড়িয়ে বক্তৃতা করেন; যিনি ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসকবর্গ, দূতগণ এবং মুসলিম লিগ নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তায় নিয়োজিত ছিলেন।কিছু প্রবীণ আইএনএ অফিসার নিরাশ হতে শুরু করেছিলেন অথবা সুভাষচন্দ্র সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছিল এবং ব্রিটিশের এবং তার প্রতিপত্তির দিকে পা বাড়াবার প্রস্তুতি নিয়েছিল।