New Update
আদৃতা ভট্টাচার্য: কলকাতা একটি মেগাসিটি । বহু ভাষাভাষীর মানুষের বসবাস এই শহরে। বিস্তৃত জনরাশির এই শহরে তাই সারা বছরই পালিত হয়ে থাকে নানান উৎসব-অনুষ্ঠান।তাই মানুষেরও উদ্দীপনার অন্ত নেই। কিন্তু বিগত দুই বছর ধরে পৃথিবীব্যাপী এক মারণ ভাইরাসের আগমন ঘটেছে, নাম কোভিড ভাইরাস। ২০২০ সালে ভারতে এবং পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা সহ নানা জেলাতেও এর সংক্রমণ ঘটেছে। বর্তমানে এই ভাইরাসটির এক অন্যরূপ দেখা দিয়েছে, যা “ওমিক্রন” নামে পরিচিত। ফলে মানুষের ঢল রাস্তাঘাটে কিছু নিয়ন্ত্রিত। ওমিক্রন কলকাতায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বাংলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ৯৮ জন। তার মধ্যে কলকাতার স্থান রয়েছে শীর্ষে। সংক্রমণের হার ক্রমশ বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৬৫ জন,যা উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও ৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে। বর্তমানে কলকাতায় সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৫১০ জন। কোভিডের এমন বাড়বাড়ন্তে কলকাতায় ২৯টি কনটেনমেন্ট জোনও তৈরি করা হয়েছে। গত ৩১শে ডিসেম্বর থেকে ৩রা জানুয়ারি রাজ্যের ৩৭৫টি নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স করে ২৬৭টির মধ্যে ওমিক্রন পাওয়া। তার মধ্যে ওমিক্রন (বি.১.১.৫২৯)ছিল একটি। আবার ওমিক্রনের উপজাতি ‘বিএ.১’ পাওয়া গেছে ২১টি এবং ‘বিএ.২’ পাওয়া গেছে ২৪৫টি। ১৪টি ডেল্টা ভেরিয়েন্ট (বি.১.৬১৭.২)এবং ডেল্টার উপজাতি ‘এ ওয়াই সিরিজ’ পাওয়া যায় ৬৯টি। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে, সেগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী ২৯৩টি নমুনার মধ্যে প্রায় ৭৪% কলকাতার।
কোভিড-১৯ এর ওমিক্রন রূপটি ডেল্টার চেয়ে অনেক বেশি সংক্রমণযোগ্য বলে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মনে করছেন। করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতি সংক্রমণকে দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি করছে। যার ফলে ক্রমশ ঊর্ধমুখী হচ্ছে সংক্রমণের রেখাচিত্র। চিকিৎসক মহল জানাচ্ছে যে, ওমিক্রন বা নতুন যে প্রজাতির কারণেই তৃতীয় ঢেউ শুরু হোক না কেন তার তীব্রতা বুঝতে ১৫-২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা প্রয়োজন। কেননা ওই সময়েই আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ শিখরে পৌছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। তারা আরও বলেন, যে কোনও ধরনের মেলা, জমায়েত চলতে থাকলে সংক্রমণের হার দ্রুতগতিতে আরও বৃদ্ধি পাবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং ইনসাকগ (ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ জিনোমিক্স কনসর্টিয়াম)সূত্রের খবর, গত দুই সপ্তাহে রাজ্যের যত লালারসের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে, তার ৭০% রিপোর্টৈই ওমিক্রন পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানা গেছে যে, টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও ওমিক্রনে আক্রান্ত ৮১ শতাংশ মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “ ওমিক্রন খুব সহজে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়িয়ে প্রবেশ করতে পারে, সেটি আগেই বোঝা গিয়েছিল। অন্যান্য রাজ্যেও এই প্রভাব দেখা দিয়েছে। বিদেশে বিশেষত লন্ডন ও ফ্রান্সে এই ওমিক্রন সর্বাধিক ছড়িয়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ১৭ই ডিসেম্বর থেকে ৭ই জানুয়ারি—এই তিন সপ্তাহে শুধু কলকাতায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৩০ গুণ বেড়েছে। চিকিৎসকদের মতে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব-ই এর অন্যতম কারণ।
corona
lockdown
pandemic
quarantine
health
west bengal
kolkata
vaccine
corona affected
kolkata corona update
omicron