নিজের মৃত্যুর আগাম বার্তা পেয়েছিলেন স্বামীজি

author-image
Harmeet
আপডেট করা হয়েছে
New Update
নিজের মৃত্যুর আগাম বার্তা পেয়েছিলেন স্বামীজি

নিজস্ব সংবাদদাতা: “শরীরমম ব্যধিমন্দিরম”, অর্থাৎ শরীর ব্যাধির মন্দিরে পরিণত হয়েছিল। স্বামীজি সর্বদা শারীরিক শক্তির উপর জোর দিয়ে এসেছেন, তিনি বলেছিলেন, “বসে গীতা পড়ার চেয়ে মাঠে ফুটবল খেলা ভাল।”আশ্চর্যের বিষয় হল, স্বামীজীর একমাত্র প্রিয় ভক্ত ভগিনী নিবেদিতাকে মৃত্যুর তিনদিন আগেই মৃত্য়ুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ১৯০২ সালে ২ জুলাই, নিবেদিতাকে নেমন্তন্ন করে পরম যত্নে নিজের হাতে করে খাইয়েছিলেন তিনি। বারে বারে নানাভাবে ইঙ্গিত দিলেও সেই মুহূর্তে বুঝতে পারেননি যে, স্বামীজী নিজেই মহাপ্রয়াণের কথা বলছেন। গুরুর মৃত্য়ুর পর তাঁর কথাগুলি স্মরণ করে বুঝতে পারেন। ২০০৩ সালে বাঙালী উপন্যাসিক শঙ্কর ‘জানা অজানা বিবেকানন্দ বলে একটি বই লেখেন। সেখানে লেখক লিখেছেন, ৪ জুলাই, স্বামীজীর মৃত্যু একই সময়ে ( ৯:১০ এ) ভগ্নী নিবেদিতা স্বপ্নে দেখেছিলেন, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের দেহ দ্বিতীয় বার ধরাধাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তাহলে কি স্বামীজির দেওয়া দ্বিতীয় মৃত্যুর বার্তা এটিই ছিল 

শুধু তাই নয়, স্বামীজি তার অনুগামী স্বামী অভেদানন্দকে তার মৃত্যুর ৫ বছর আগেই তার মহাপ্রয়াণে কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন । তিনি বলেছিলেন , ” বুঝলে অভেদানন্দ আমি হয়তো আর পাঁচ ছয়েক বছর বাঁচবো, আমার আত্মা দিন দিন বড় হয়ে যাচ্ছে । এত বড় হয়ে যাচ্ছে যে,শরীরের মধ্যে থেকে তাকে আর ধরে রাখা যাচ্ছে না , সে বারে বারে এ শরীর ছেড়ে পালাতে চাইছে “।


তাঁর লেখা বই থেকে জানা যায়, ৪ জুলাই, তাঁর মহাপ্রয়াণের দিন স্বামীজি অত্যন্ত সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলেন। বেলুড় মঠের প্রার্থনা গৃহে তিন ঘণ্টা ধ্যান করেন তিনি। এরপর ছাত্রদের শুক্লা-যজুর্বেদ, সংস্কৃত ব্যকরণ ও দর্শনশাস্ত্র শেখান। পরে স্বামী প্রেমানন্দের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ পায়চারি করেন তিনি, আলোচনা করেন রামকৃষ্ণ মঠের ভবিষ্যত্‍ নিয়ে। সেদিন বেলুড়ঘাটে জেলের নৌকো ভিড়েছিল। নৌকো ভর্তি গঙ্গার ইলিশ মহোত্‍সাহে কিনিয়েছেন বিবেকানন্দ। সবার সঙ্গে বসে দুপুরে খেয়েছেন ইলিশের নানা পদ। অনেকেই মনে করেন স্বামীজি নিরামিষাশী ছিলেন। যদিও এ কথা সত্য নয়। তিনি মাছ-মাংস খেতেও যথেষ্ট পছন্দ করতেন বলে জানা যায়। রামকৃষ্ণ মিশনে থাকাকালীন সময়েও তিনি শুধু নিরামিষ আহার গ্রহণ করতেন না। সন্ধে ৭টা নাগাদ নিজের ঘরে চলে যান তিনি। বলে যান, এখন কেউ যেন তাঁকে বিরক্ত না করে। ঘরে গিয়ে ধ্যানে বসেন তিনি। ধ্যান করতে করতেই রাত ৯টা ১০ মিনিটে আনন্দলোকে যাত্রা করেন এই বীর সন্ন্যাসী।