নিজস্ব সংবাদদাতা: কচুরি খেতে ভালোবাসে না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু জানেন কি, স্বামী বিবেকানন্দও কচুরি খেতে খুব পছন্দ করতেন। তিনি বলতেন, কচুরি ছাড়া নাকি তাঁর দিন চলে না। মাঝে মাঝেই কলকাতার নামকরা দোকানে ঘুরে ঘুরে তিনি কচুরি খেতেন। আবার মাঝে মাঝে দোকান থেকে আনিয়েও খেতেন। কিন্তু বিদেশে থাকার সময় তাঁকে কে বানিয়ে দেবে কচুরি আর তরকারি? বিদেশে বাড়ির বেসমেন্টে বসেই তিনি বানিয়ে ফেলতেন গরমাগরম কচুরি আর তরকারি। তার পর তৃপ্তি করে তা উদরস্থ করতেন।
ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন স্বামীজি। পথে এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আচ্ছা, আপনি কোন সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসী? গিরি না তোতাপুরি?’ বিবেকানন্দ বরাবরই কথার প্যাঁচে পটু ছিলেন। তাঁর জবাব ছিল, ‘গিরি তোতাপুরি কোনওটাই না, আমি কচুরি সম্প্রদায়ভুক্ত।’ এমনই ছিল তাঁর কচুরি প্রেম। সিমলার বিখ্যাত কচুরি বিক্রেতা ‘পরমহংসের কচুরি’র দোকান থেকে তিনি প্রায়ই কচুরি আনাতেন নিজের আর বন্ধু রাখালের জন্য। পরবর্তীকালে রাখালই হন স্বামী ব্রহ্মানন্দ।শুধু কচুরি নয়, স্বামীজি ছিলেন আসলে খাদ্য রসিক। নানা রকম খাবার তাঁর পছন্দের তালিকায় ছিল। শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, ‘খালিপেটে কখনও ধর্ম হয় না’। গুরুদেবের এই কথাটি বিবেকানন্দ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। আর তা হবে না কেন! ছোটবেলা থেকে দত্ত পরিবারের বাসমতী চালের পোলাও খেয়ে বড় হওয়া। তাঁর পিতাও ছিলেন ভোজনরসিক। মাংস আর পোলাও ছাড়া অন্য কোনও খাবারে দত্ত বাড়ির রুচিই আসত না। শ্রীরামকৃষ্ণও স্বামীজিকে খাওয়াতে ভালোবাসতেন। তিনি বলতেন, ‘নরেনকে খাওয়ালে লক্ষ ব্রাহ্মণ ভোজন করানোর পুণ্য হয়…।’ কিন্তু তাঁর খাদ্য তালিকায় সব কিছুর উপরে থাকত কচুরি আর তরকারি। এটা না খেলে তাঁর দিন যেত না। সমস্ত মায়া ত্যাগ করা মানুষটি কচুরি দেখলে লোভ সংবরণ করতে পারতেন না।