হরি ঘোষ, জামুড়িয়া : পুনর্বাসন ও রক্ষার দাবিতে কেন্দা খোলামুখ খনিতে বিক্ষোভ কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটির। কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটির দাবিকে সমর্থন জানিয়ে রাস্তায় নামার হুমকি জামুরিয়া বিধায়ক হরেরাম সিং-এর। গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ কেন্দা কোলিয়ারির বন্ধ ২ নং পিঠ এলাকায়
আগুন নেভাতে গিয়ে ভূগর্ভে তলিয়ে যান ইসিএলের এক আধিকারিক অজয় মুখার্জি। ইসিএল-এর কেন্দা এরিয়ার সিনিয়র অভার্মেন পদে কর্মরত ছিলেন। ইসিএল সূত্রের খবর গত কয়েক দিন আগে ওই এলাকায় মাটির ভিতর থেকে
প্রচন্ড কালো ধোয়া দেখা যায় এবং রাত থেকে সেই ধোয়া রূপান্তরিত হয় ভয়াবহ আগুনে। এই আগুনকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। সেই আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কোলিয়ারির পক্ষ থেকে ছাঁই ভরাটের কাজ চলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, সিনিয়র অভার্মেন অজয় মুখার্জি সেই কাজ তদারকির কাজ করছিলেন। কিন্তু আজ বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হঠাৎ করে তিনি মাটির গর্ভে তলিয়ে যান। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইসিএল ও পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে আসেন জামুড়িয়ার বিধায়ক হরে রাম সিং। বিধায়ক হরে রাম সিং জানান, "এই এলাকায় ধস ও আগুন একটা বড় সমস্যা। বহু চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত কোন সমাধান বের করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনা খুবই মর্মান্তিক।" তবে তিনি আশাবাদী, অজয় মুখার্জি কে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হবে। অপরদিকে ধসে যাওয়া অংশে ছাঁই ভরাট কে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটি সদস্যদের একাংশের মতে ওই এলাকায় ইসিএল-এর পরিত্যাক্ত খনির প্রচুর মাটি রয়েছে। সেই মাটিগুলো ভরাটের কাজে লাগালে কেন্দা
এলাকায় প্রচুর সমতল জায়গা তৈরি হতো। যার ফলে স্থানীয়রা খেলার মাঠ সহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু ইসিএল এর কিছু আধিকারিক ও স্থানীয় কিছু মানুষের সহযোগিতায় পরিকল্পিতভাবে ছাঁই ভরাট করা হচ্ছে বলে দাবি কেন্দা গ্রামবাসীদের একাংশের। কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য সন্দীপ ব্যানার্জি জানান, "ধ্বস প্রবন এলাকায় পুনর্বাসন এর জন্য তারা ২০১৬ সালে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। স্থানীয় মানুষদের জীবন ও জীবিকার কথা মাথায় রেখে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। কিন্তু ইসিএলের আধিকারিকদের একাংশ চক্রান্ত করে গরিব মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।
গত ২০১৭ সালে এইরকমই আগুন ও ধ্বসের জেরে পুরো গ্রামবাসীদের একাংশকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিলো নিকটবর্তী বিদ্যালয়গুলিতে। তারপর আবার তারা ফিরে যায় নিজের নিজের বাড়িতে।" বারবার আগুন ও ধসের জেরে আতঙ্কিত গোটা গ্রামের মানুষ। কেন্দা গ্রাম রক্ষা কমিটি বারবার পুনর্বাসনের দাবি করে গেলেও এখনো মেলেনি পুনর্বাসন, এমনই অভিযোগ করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইসিএল নিজেদের কর্মীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। ফলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব কে নেবে?