দিগবিজয় মাহালি, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ এলাকাজুড়ে পরপর চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই! ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে রাত পাহারায় মোতায়েন। পশ্চিম মেদিনীপুর যেন ফিরে গেল বারো বছর পিছনে। গা ছমছমে নিঝুম শীতের রাত! অন্ধকারের বুক চিরে মাঝেমধ্যেই ঠিকরে বেরোচ্ছে এলইডি টর্চের তীব্র আলো। কখনো কখনো হুইসেলের তীক্ষ্ণ ধ্বনি। পাকা রাস্তার উপর বাঁশের লাঠির ঠকাঠক আওয়াজ। রাত পাহারায় ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসীরা। না বছর বারো-তেরো আগের (২০০৮-০৯) সেই মাওবাদী সময় নয়। ২০২১ এর ডিসেম্বর মাস। কিন্তু, দৃশ্য খানা পশ্চিম মেদিনীপুর বাসীকে মনে করিয়ে দেয় সেই ভয়াবহ মাওবাদী স্মৃতি বিজড়িত দিনগুলোর কথাই। আবার, অনেকের স্মৃতিপটেই ভেসে আসছে ঠিক বছর পনেরো আগেই খড়্গপুর শহরের ইন্দা এলাকার ত্রাস রাজেশ গুপ্তা-কে ঠেকানোর জন্য পুলিশ আর এলাকাবাসীর যৌথ রাত পাহারার কথা। এবারের ঘটনাস্থল শহরের পাশেই ৬০ নং জাতীয় সড়ক সংলগ্ন খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকা। জাতীয় সড়কের ঠিক পাশেই, খড়্গপুর গ্রামীণের লছমাপুর তিন নম্বর অঞ্চলের খাটরাঙা, রাধানগর থেকে বালিহাটি, জকপুর অবধি প্রায় ১২-১৪ টি গ্রামজুড়ে গত ২-৩ মাস ধরে লাগাতার চলছিল চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি। অভিনব কায়দায় কখনও চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে জাতীয় সড়কের উপর থেকে বাইক ছিনতাই কিংবা ফাঁকা ঘর থেকে সোনাদানা, মোবাইল, ল্যাপটপ প্রভৃতি ছিনতাই। শুধু রাতের বেলায় নয়, ভরদুপুরে কিংবা কাকভোর-বিকেল-সন্ধ্যাতেও হয়েছে চুরি-ছিনতাই। মাঝে মধ্যে কিছু দুষ্কৃতীকে পুলিশ ধরলেও, পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি এই চুরি-ছিনতাই। অবশেষে, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, 'গ্রাম সুরক্ষা বাহিনী' গড়ে তোলার। সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত এবং খড়্গপুর গ্রামীণ থানাও।
চুরি-ডাকাতি ঠেকাতে রাত পাহারায় গ্রামবাসীরা
New Update