নির্বিচারে চলছে অবৈধ বালির কারবার

author-image
Harmeet
New Update
নির্বিচারে চলছে অবৈধ বালির কারবার

হরি ঘোষ, অন্ডাল:- অন্ডাল থানা এলাকার দামোদর ​​নদী থেকে বালি উত্তোলনের জন্য দুটি ঘাটে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একটি বালি ঘাট পরিচালনা করছেন বৈষ্ণব দেবী এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নীরজ পান্ডে এবং গৌতম মণ্ডল, আর দ্বিতীয় ঘাটের জন্য এখানে কিরণ খাঁ এবং চিন্ময় মন্ডল এর টেন্ডার রয়েছে। সরকারী ভাবে এই দুটি ঘাট থেকেই বালি তোলার অনুমতি রয়েছে । উভয় টেন্ডারধারী অন্ডালের মদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পুবরা ঘাট থেকে বালি উত্তোলন করেন। ভূমি রাজস্ব দপ্তর এই দুই টেন্ডারধারীর জন্য বালি উত্তোলনের জন্য নদীতে একটি করে বালির প্লট নির্ধারণ করেছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের পর নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে একদিকে বন্যার কারণে বৈষ্ণব দেবী এন্টারপ্রাইজের প্লট থেকে বালি উত্তোলন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে সূত্র মারফৎ জানা যায়। বৈষ্ণব দেবী এন্টারপ্রাইজ, যা বেশিরভাগ স্থানীয় এলাকায় বালি সরবরাহ করে বলে খবর। জলে তলিয়ে যাওয়ার কারণে তাদের প্লটের ক্ষতির ক্ষতিপূরণের জন্য, বিকল্পভাবে, তারা তাদের প্লট থেকে কিছু দূরত্বে জমা বালি উত্তোলন শুরু করে, যার কারণে বিএলআরও চার্জ আরোপ করে। ফলে এ কারণে এ কোম্পানির কাজ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় স্থানীয় এলাকায় বালির সংকট দেখা দিয়েছে, যার সুযোগ নিয়ে অন্য কোম্পানির লোকজন বালি ক্রেতাদের কাছ থেকে অধিক দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ।এ বিষয়ে বৈষ্ণব দেবী এন্টারপ্রাইজের ডিরেক্টর নীরজ পান্ডে জানান, ২০১৭ সালে তিনি ৫ বছর ধরে বালির টেন্ডার নিয়েছিলেন। যার অধীনে বিএলআরও তাদের বালু উত্তোলনের জন্য নদীতে প্রায় 10.3 একর একটি প্লট নির্ধারণ করেছিল। সম্প্রতি অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধের লক্ষ্যে সরকার বৈধ বা অবৈধ যে কোনো ধরনের বালি উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। বর্তমানে শুধু সরকারি নিয়মে বৈধ চালানের ভিত্তিতে বালি উত্তোলনের নির্দেশ রয়েছে, এতে বালি ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট থাকলেও প্রকৃতির রোষানলে পড়ে বালি ব্যবসায় সমস্যায় পড়েছে। নীরজ পান্ডে জানান, ঘূর্ণিঝড়ে নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় তার বালির প্লট এখন নদীতে মিশে গেছে যেখান থেকে বালি তোলা অসম্ভব, তাই তিনি বিকল্পভাবে জমে থাকা বালি তুলতে চেয়েছিলেন। তার প্লট থেকে অল্প দূরত্বে।যার কারণে BLRO এই কোম্পানিকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে। নীরজ পান্ডে এই মামলায় অন্য কোম্পানির লোকজনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। বলা হয়েছে, আমরা সরকারি টেন্ডার নিয়েছি, এমন পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট পরিমাণে বালি তোলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারো নিয়ন্ত্রণ নেই। যেহেতু তারা সরকারি চালানে বালি উত্তোলন করে, সেহেতু একই ঘাটে অন্য জায়গা থেকে বালি তুলতে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, কখনো চাঁদার নামে আবার কখনো ভিত্তিহীন কারণ দেখিয়ে অন্য ঘাটের লোকজন বিভিন্নভাবে হয়রানির করছেন আমাদের। কোম্পানির কাজ বন্ধ থাকায় এখানে কর্মরত শতাধিক শ্রমিককেও সমস্যায় পড়েছে । এছাড়া স্থানীয় এলাকায় বালির ঘাটতি রয়েছে গ্রাহকদের বাধ্য হয়ে অন্য বালি ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী বালি কিনতে হচ্ছে।তিনি জানান, পুরোনো টেন্ডার শেষ হতে এখন মাত্র কয়েক মাস বাকি, এমন পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশে তার কোম্পানির কাজ বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। 5 বছরে আমাদের কোম্পানী এখনও বেঞ্চ মার্ক সম্পূর্ণ করেনি এখনও তাদের চালান আকারে 5 বছরের মধ্যে জরিমানা হিসাবে আনুমানিক 1 কোটি টাকা দিতে হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদীতে একটি অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করা হয়েছে, যার সাহায্যে ট্রাকগুলো প্লটে যায়, এই বাঁধটি অনেক পুরনো হওয়ায় এবং সুবিধার ভিত্তিতে এটিকে সামনে রেখে চালান করা হয়েছে। এই বাঁধের সাহায্যে পাওয়া যায়, তারা টেন্ডার করেছে।যেখানে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘাটটি আমাদের ছিল, সেখানে এই অস্থায়ী বাঁধটি নিয়ে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয় কারণ এই বাঁধের কারণে নদীর প্রবাহে কোনও সমস্যা নেই। কোনো অসুবিধা হলে উভয় টেন্ডারধারীকে চালান দিতে হবে। উভয় ব্যবসায়ীর কাজ বন্ধ করতে হবে। কিন্তু শুধুমাত্র আমাদের কোম্পানির কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল।তিনি জানান যে তিনি স্থানীয় বিএলআরও-র কাছে লিখিতভাবে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন, যার অধীনে তিনি অন্য জায়গা থেকে বালি তোলার দাবি জানিয়েছেন। এ সমস্যা শুধু আমাদের কোম্পানির নয়, নদীর শেষ প্রান্তে বালি জমার কারণে নদীর জল স্তর প্রায় ৫০০ মিটার চলে গেছে। এ কারণে স্থানীয় লোকজন নদী জল সরবরাহ, সেচসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বাস্কা ও পূবরা গ্রামের মানুষ এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিএলআরও ও অন্যান্য জেলা আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, যেহেতু সরকারি টেন্ডারে নদী থেকে বালি উত্তোলনের নির্দেশ রয়েছে, সেহেতু এখানে কর্মরত কোম্পানিগুলোকে নদীর মাঝখান থেকে বালি না উত্তোলনের নির্দেশ দেওয়া হোক। যার কারণে নদীর শেষ প্রান্তে বালি জমা কম হবে যার ফলস্বরূপ কারণে নদীর জল পাড় পর্যন্ত আসবে। যার ফলে এখানকার মানুষ সহজেই নদীর জল ব্যবহার করতে পারবেন।