সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার কাশ্মিরি মানবাধিকার কর্মী

author-image
Harmeet
New Update
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার কাশ্মিরি মানবাধিকার কর্মী


নিজস্ব সংবাদদাতা: ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে এক মানবাধিকার কর্মীকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় সন্ত্রাসবিরোধী গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)।সোমবার সন্ধ্যায় খুররুম পারভেজ নামের এই মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয় বলে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে জানায় তার পরিবার।এর আগে সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীন কাশ্মিরের রাজধানী শ্রিনগরের নিজ বাড়ি থেকে এনআইএ অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়, খুররুম পারভেজকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার করে নয়াদিল্লি পাঠানো হচ্ছে।


এনআইএ কর্মকর্তারা খুররুম পারভেজের বাড়িতে তল্লাশি করার সময় তার ফোন, ল্যাপটপ, বই ও তার স্ত্রীর ফোন জব্দ করে নিয়ে যায় বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।


এছাড়া শ্রিনগরের আমিরা কাদাল এলাকায় খুররুম পারভেজের মানবাধিকার সংগঠন জম্মু-কাশ্মির কোয়ালিশন সিভিল সোসাইটির (জেকেসিসিএস) কার্যালয়েও তল্লাশি চালানো হয়েছে।


এছাড়া কাশ্মিরে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিনিধি পারভেজ বুখারি, জেকেসিসিএসের সদস্য পারভেজ আহমদ মাট্টা ও স্বতি শেশাদরির বাড়ি এবং এনজিও সংস্থা আতরুটের কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে।


এর আগে গত বছরের ২০ অক্টোবর এনআইএ কাশ্মিরি এই মানবাধিকার কর্মীর বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি অভিযান চালায় এবং 'সন্ত্রাসে অর্থায়ন' মামলায় কম্পিউটার ও অন্য গ্যাজেট জব্দ করে নিয়ে যায়।


খুররুম পারভেজ কাশ্মির অঞ্চলে মানবাধিকার আন্দোলনের পরিচিত মুখ। বিপুল সামরিক উপস্থিতি থাকা পাহাড়ি এই উপত্যকায় মানবাধিকার আন্দোলন পরিচালনার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও লাভ করেছেন। কাশ্মিরিদের মানবাধিকার রক্ষায় তার জোরালো কণ্ঠ ও প্রচেষ্টার কারণে এর আগেও তিনি গ্রেফতারির শিকার হন।


১৯৪৭ সালে ব্রিটেন থেকে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর পাহাড়ি উপত্যকা কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ভূখণ্ডটি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তিনবার যুদ্ধ হয়।


কাশ্মিরের অনেক বাসিন্দাই পাকিস্তানে সাথে যুক্ত হওয়া বা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সমর্থন করে আসছেন। নয়াদিল্লি কাশ্মিরীদের এই মনোভাব ও সংশ্লিষ্ট তৎপরতাকে পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাস হিসেবে বর্ণনা করে আসছে। অন্যদিকে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।


কাশ্মিরিদের লড়াইয়ের প্রতিরোধে ভারতের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে বিপুল সৈন্য মোতায়েনের অভিযোগ করা হয়। মোতায়েন সৈন্যের মোট সংখ্যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান জানা না গেলেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভাষ্য অনুসারে, ভারতীয় সামরিক, আধাসামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১০ লাখ সদস্য এই অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে।


পাকিস্তান, ভারত ও স্থানীয় কাশ্মিরীদের মধ্যে চলমান লড়াইয়ে সরকারি বাহিনীর সদস্য, বিচ্ছিন্নতাকামী বিদ্রোহী ও সাধারণ মানুষসহ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ লোক নিহত হয়েছে।