হরি ঘোষ, দুর্গাপুর : পানাগড় হেলথ সেন্টার থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে শুক্রবার দুপুরে ভর্তি হন কাঁকসার পানাগড় এর বাসিন্দা। দুপুর আড়াইটা নাগাদ এই গর্ভবতী মহিলাকে মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। অভিযোগ, হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ বিনীতা কুমারী রুগীকে এখনো সন্তান হতে দেরি আছে বলে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেন। কিন্তু আতঙ্কে ঐ গর্ভবতী মহিলা মহকুমা হাসপাতাল ছাড়তে রাজি হয়নি, এরপর ঐ মহিলার পরিবার শুক্রবার সন্ধে নাগাদ হাসপাতালের সুপার ডক্টর ধীমান মন্ডলের দ্বারস্থ হন। সুপার শুক্রবার সন্ধেতে বলেন বলে জানান, আপাতত সরকারী হাসপাতালেই থাক গর্ভবতী ঐ মহিলা, শনিবার সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অভিযোগ, শনিবার সকালে গর্ভবতী ঐ মহিলাকে চিকিৎসা করানোর নাম করে মারধর করে দুর্গাপুর হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ বিনীতা কুমারী। কেন এই ব্যাপারে সুপারের কাছে গেছেন তারা এই প্রশ্ন তুলে শাসানো হয় গর্ভবতী মহিলাকে। জোর করে বন্ডে সাইন করিয়ে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিবাদ করেন ঐ মহিলা। এরপরই তাকে চিকিৎসা করার নাম করে গালে থাপ্পড় মারার পাশাপাশি মারধর করার অভিযোগ ওঠে বিনীতা কুমারী নামে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ঐ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে প্রসূতি ওয়ার্ড ছেড়ে গর্ভবতী অসুস্থ ঐ মহিলা মহকুমা হাসপাতালের সুপারের ঘরের সামনে চলে আসেন। আসেন রুগীর পরিবার পরিজনও । অবিলম্বে বিনীতা কুমারী নামে ওই চিকিৎসকের শাস্তি দাবি তোলেন তারা। যতক্ষণ না তারা সুবিচার পাচ্ছেন ততক্ষন তারা সুপারের রুমের সামনেই থাকবেন বলে জানিয়ে দেয় পরিবারের লোকজন। ওয়ার্ডে ফিরে যেতে অস্বীকার করেন গর্ভবতী ঐ মহিলা। শনিবার সকালে এই ঘটনার জেরে ধুন্দুমার কান্ড ঘটে যায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্তিতির সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের কাছেও গর্ভবতী মহিলার পরিবার পরিজন ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। রুগীর পরিবারের সাথে এরপর আলোচনায় বসে কোনোক্রমে পরিস্তিতি সামাল দেওয়া হয়, সিদ্ধান্ত হয় অন্য চিকিৎসককে দিয়ে গর্ভবতী ঐ মহিলাকে চিকিৎসা করানো হবে। এই ঘটনায় ফের বিতর্কের শিরোনামে সরকারী হাসপাতাল, তাও আবার গর্ভবতী অসুস্থ মহিলাকে মারধরের অভিযোগের ঘটনা খোদ সরকারী হাসপাতালের ভেতর। অভিযুক্ত চিকিৎসক বিনীতা কুমারী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডক্টর ধীমান মন্ডল মারধরের অভিযোগ পাওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ে সুবিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।