হাবিবুর রহমান, ঢাকাঃ কারও কাছে ‘কার্তিক ব্রত’, কারও কাছে ‘রাখের উপবাস’ বা ‘গোসাইর উপবাস’। ব্রতকথার যে নামই হোক না কেন? বিপদ-আপদ, রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে মঙ্গলবার বাংলাদেশের পুরান ঢাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা ‘রাখের উপবাস’ পালন করেছেন।
নিয়মানুযায়ী ১৫ কার্তিকের পর মাসের বাকি সময়ের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার তাঁরা এ ব্রত পালন করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার স্বামীবাগে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দিরে কয়েকশো নারী-পুরুষ প্রদীপ, ধুপ, ফল, ফুল সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে লোকনাথের আরাধনায় নিমগ্ন হয়। এই ব্রতের আগের দিন সংযম করতে হয়। তারপর উপবাস থেকে সন্ধ্যার আগে ধুপ, প্রদীপ ইত্যাদি নিয়ে বসতে হয়। আরাধনায় বসে প্রদীপ জ্বালানোর পর কথা বলা বন্ধ করে দিতে হয়। সংযম, মনোব্রত ও মনকে একাগ্রচিত্তে লোকনাথকে ডাকতে হয়। প্রদীপ যখন জ্বলা শেষ হবে, মন্দির থেকে চাল-কলা দিয়ে দেয়। সেই চাল-কলা দিয়েই পুণ্যার্থীরা উপবাস ভঙ্গ করবেন। আবার অনেকে এই চাল-কলা রেখে দেন। যখন কোনো বিপদ-আপদ আসবে তখন মানত হিসেবে তাঁরা তা খান। বিভিন্ন রোগ বালাই হাত থেকে মুক্তি এবং আপনজনদের মঙ্গল কামনায় কার্তিক মাসে এ উপবাস পালন এবং আশ্রম প্রাঙ্গণে ঘিয়ের প্রদীপ ও ধূপ-ধুনা জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে লোকনাথ আশ্রমে প্রতি বছর কার্তিক মাসে হয় এই উৎসব। ‘রাখের উপবাস’ নামে পরিচিত এই অনুষ্ঠানকে কেউ কেউ ‘কার্তিক ব্রত’ও বলে থাকেন।