কুললক্ষ্মীই পূজিতা হন কালী রূপে, জানেন কোথায়?

author-image
Harmeet
New Update
কুললক্ষ্মীই পূজিতা হন কালী রূপে, জানেন কোথায়?

বনমালী ষন্নিগ্রহী,বাঁকুড়াঃ কথিত আছে এই গ্রামে কালি মূর্তি গড়ে পূজা নিষিদ্ধ, কালি মূর্তি গড়ে পূজো করতে গিয়ে নাকি ঘটেছে অঘটন। তবে সে নেহাতই কাকতালীয় না লোককথা সে নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে ৪০০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিমা বিহীন কালী পূজা হয়ে আসছে রাইপুরের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে। এই গ্রামের জাগ্রত দেবী বুড়িমা, তিনিই গ্রামের একমাত্র শক্তির উপাস্য দেবী। তাই শক্তির আরাধনায় এখানে কোনও মূর্তি পুজো হয় না।
 বাঁকুড়ার রাইপুর ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর রাজপরিবারের কুললক্ষ্মী ‘বুড়িমা’ বা ‘মা ষড়চক্র বাসিনী’ই কালী রূপে পূজিতা হন এখানে। বছরের পর বছর এই নিয়মই চলে আসছে এলাকায়। কথিত আছে শ্যামসুন্দরপুর রাজপরিবারের তৎকালীন রাজা ছত্রনারায়ণ দেওকে তাঁদের কুললক্ষ্মী ষড়চক্রবাসিনী স্বপ্নাদেশ দেন 'আমিই কালী। আমার কোনও মূর্তি গড়ে এই এলাকায় পুজো করা চলবে না।'


সেই তখন থেকেই রাজপরিবারের কুললক্ষ্মী ষড়চক্রবাসিনীকেই কালী রূপে পুজা করা হয়। রাজা পশুপতি নারায়ণ দেও-র নামে সংকল্প করা হতো। পুজোর রাতে রাজপরিবারের কুললক্ষ্মীকে নির্দিষ্ট মন্দিরে আনা হয়। পুজো-পাঠ শেষে আবারও দেবী ষড়চক্রবাসিনীকে রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও এখানে ছাগলবলি চালু আছে বলে পুরোহিত জানালেন। শ্যামসুন্দরপুর রাজপরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় মানুষরা বলেন, মায়ের নির্দেশানুসারে এই এলাকায় ঘট স্থাপন করে পুজো করলেও কেউ কালী মূর্তি তৈরী করে পুজো করেন না। কারণ আগে কেউ কেউ প্রতিমা তৈরী করে পুজো করার চেষ্টা করলেও, নানান বাধার সম্মুখীন হওয়ায় আর কেউ সাহস পায়নি। আমাদের কুললক্ষ্মী ষড়চক্রবাসিনী দেবীই দক্ষিণাকালী হিসেবে কালীপুজোর রাতে এখানে পুজিতা হন বলে জানান তারা।
তখন থেকেই এই এলাকায় কোন কালী মূর্তি তৈরী করে পুজো হয় না৷ আর প্রতি বছর মহা ধুমধামের সঙ্গে কার্তিকেয় অমাবস্যায় একমাত্র ষড়চক্র বাসিনীকে দক্ষিণাকালী রূপে পুজো করা হয়। কয়েকশো বছর ধরে চলে আসা এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি আজও। বংশানুক্রমে শ্যামসুন্দরপুর রাজবাড়ির সূত্রে জানা যায়, রাজা ছত্রনারায়ণ দেও মায়ের স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর এই এলাকায় কোনও দিন কারোর কালী মূর্তি গড়ে পুজো করার সাহস হয়নি।