হুলার আগুন নিয়েই দীপাবলিতে ব্যস্ত মেদিনীপুর সদরের বাসিন্দারা

author-image
Harmeet
New Update
হুলার আগুন নিয়েই দীপাবলিতে ব্যস্ত মেদিনীপুর সদরের বাসিন্দারা

দিগ্বিজয় মাহালী, মেদিনীপুর বৈদ্যুতিক আলোয় যখন ঝলমলে চারিদিক, সেই সময় হুলায় আগুন জ্বালানোয় ব্যস্ত জঙ্গলমহলবাসী। তার আগুনে আলোকিত এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম। কার্যত ফিকে কালীপুজো বা দীপাবলির আনন্দ! দেখা গিয়েছে, সূর্য ডুবলেই লোহার রডের ডগায় বস্তা জড়িয়ে মোবিল দিয়ে জ্বালানো আগুনের হুলা নিয়ে পাহারায় গ্রামবাসীরা। কখনও পাহারায় বন দফতরের ভাড়া করা 'হুলা পার্টি'। না হলে জমির পাকা ধান শেষ করে দেবে দলমার দাঁতাল বাহিনী। মেদিনীপুর শহর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে ডেরা বেঁধেছে ২৫টি হাতির পাল। তিনদিনে পড়ল তাদের অবস্থান। বিকেল হলেই সোনালী ফসল 'লুট' করে নিচ্ছে। যেন বর্গি হানা! সেই হানা রুখতে না পারলে বাড়ি পৌঁছাবে না রোদ বৃষ্টিতে ঘাম ঝরিয়ে ফলানো ফসল। বুধবার বিকেলেও দেখা গেল কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দগাড়ি ও বাগডুবিতে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে দাঁতালদের। তাদের উত্তেজিত করে চলেছে বেশ কিছু যুবক। তাতে যেকোন সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন বন দফতর। পাশাপাশি কাঁচা ধান দাঁতালদের থেকে বাঁচাতে কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা। ক্ষোভ প্রকাশ বন দফতরের বিরুদ্ধে। ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণও মিলে না অভিযোগ। তবে ক্ষতি এড়িয়ে হাতির পালকে অন্যত্র সরাতে প্রস্তুত বন দফতরের হুলা পার্টি। এদিন জঙ্গলে প্রবেশ করে হুলার আগুনে অন্ধকারকে ফালাফালা করে এগিয়ে চলেছে হাতির পিছনে। মাঝে মাঝে পটকার আওয়াজ, সাধারণ মানুষদের চিৎকার, হুলা পার্টির হুংকারে গভীর জঙ্গলে এগিয়ে চলেছে দাঁতালরা। কখনো এগোনো কখনো পিছনো, এ গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম, এইভাবে কেটে যাচ্ছে রাত। হাতির পালও তার যাতায়াতের স্বভাব পাল্টে দল ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে হুলা পার্টিকে নাজেহালে ফেলছে। গত দু'দিন ধরে এই পরিস্থিতিতে হাতির পালকে বাগডুবি থেকে সরাতে কার্যত ব্যর্থ হয় হুলা পার্টি। বুধবার ফের চেষ্টা চলে। এদিকে হাতি না সরায় হুলা পার্টিকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ স্থানীয়দের। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, হাতির গতিবিধি অনুযায়ী সরানোর চেষ্টা করা হয়। জোর করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।