নিজস্ব সংবাদদাতাঃ দক্ষিণ বঙ্গ সীমান্তের অধীনে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাতে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী অবৈধভাবে সীমান্ত পার করার চেষ্টা করার সময় মা ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে । বাংলাদেশের বাসিন্দা মা ও মেয়ের পরিচয় সামিরা (কল্পিত নাম), বয়স ৪৫ বছর এবং আলিমা (কল্পিত নাম), বয়স ১৭ বছর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
২২ শে জুন, ২০২১ মঙ্গলবার দুপুরে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের গোয়েন্দা শাখা, ৯৯ ব্যাটেলিয়ন সীমান্ত চৌকি জিতপুর এলাকা দিয়ে কিছু লোকের অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের খবর পায় । যার ভিত্তিতে সীমান্ত চৌকির কোম্পানি কমান্ডার জিতপুর এলাকায় নিযুক্ত করা জওয়ানদের সতর্ক করে দেন । দুপুর আনুমানিক সোয়া ০১ টার দিকে জওয়ানরা পাট ক্ষেতে দুই থেকে তিন জনের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করে। জওয়ানরা পাট ক্ষেত ঘেরাও করে তল্লাশির সময় ঘটনাস্থল থেকে দু'জন মহিলাকে গ্রেপ্তার করে এবং আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের সীমান্ত চৌকি জীতপুরে আনা হয় ।
জিজ্ঞাসাবাদে আলিমা (কল্পিত নাম) জানিয়েছে যে তার বাবা-মা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার বিয়ে ঠিক করেছিলো । এদিকে তার গ্রামের দুই ব্যক্তি, কালু এবং সুহাগ তাকে ভারতে পার্লারে কাজের প্রতিশ্রুতি দেয় । তখন সে বিয়ে এড়াতে ঘর থেকে পালিয়ে কালুর সাথে ভারতে চলে আসে যেখানে কালু ভারতের বসিরহাটের নিবাসী মোহাম্মদ আলি নামে এক দালালের কাছে তাকে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেয় । সেখান থেকে তাকে পাঞ্জিপাড়ায় (উত্তর দিনাজপুর) এনে সেখানে তাকে পতিতাবৃত্তির কাজ করতে বাধ্য করে । সে আরও বলেছে যে মিঠুন নামে একটি ছেলে যে তাঁর কাছে আসতো এবং তাঁর দুঃখের কথা শুনে সে বাংলাদেশে তাঁর মায়ের কাছে পুরো ঘটনাটি ফোনে বলে।
মেয়ের অবস্থা জানতে পেরে মা সিদ্ধান্ত নেয় যে কোনও মূল্যে তাকে ফিরিয়ে আনবে। আলিমার মা জানায় যে, তার মেয়ে ১৬ জানুয়ারী ২০২১ থেকে নিখোঁজ ছিল এবং সে পল্লবী মিরপুর থানায় একটি রিপোর্ট দায়ের করে যে কিছু দিন আগে ভারত থেকে মিঠুন নামে একটি ছেলের কল এসেছিল যে জানিয়েছিল তার মেয়ে ভারতের পাঞ্জিপাড়ায় আছে। এই আহ্বানের পরে সে ভারতে গিয়ে কোনও ভাবে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় । এই প্রসঙ্গে সে অবৈধভাবে ভারতে এসে পাঞ্জিপাড়ার গ্রাম প্রধানের সহায়তায় মেয়েকে দালালের হাত থেকে উদ্ধার করে এবং আজ মা ও মেয়ে দুজনেই বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিলো তখন সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া ০২ জন মহিলার অপরাধের গুরুতরতা বিবেচনা করে বর্ডার গার্ডকে মানবিক কারণে বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।৯৯ ব্যাটেলিয়ন এর কমান্ডিং অফিসার শ্রী রবি কান্ত বলেছেন যে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং মানব পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যার কারণে এই জাতীয় অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা প্রচুর অসুবিধায় পড়ছে এবং তাদের মধ্যে অনেক কে আইন অনুসারে ধরা এবং শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি বাংলাদেশী মানুষকে মানবিক কারণে তাদের অপরাধের গুরুত্ব এবং উভয় দেশের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর পারস্পরিক সদিচ্ছার কারণে তাদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের এই ধরণের পদক্ষেপও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে বাংলাদেশী দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করছে।
আরও খবরঃ
https://anmnews.in/Home/GetNewsDetails?p=4127
/
https://anmnews.in/Home/GetNewsDetails?p=4124
For more details visit
Follow us at
https://www.facebook.com/newsanm