ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখতে ৭ জেলায় কঠোর লকডাউন

author-image
New Update
ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখতে ৭ জেলায় কঠোর লকডাউন

হাবিবুর রহমান, ঢাকা : মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি ও রাজধানী ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখতে এর পার্শ্ববর্তী ৭ জেলায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে আগামি ৩০ জুন বুধবার পর্যন্ত এই ৭ জেলায় কঠোর লকডাউন চলবে। জেলাগুলো হচ্ছে মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ। সোমবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জরুরি ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। এছাড়াও মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ৬২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে আরো ৪ হাজার ৬৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। দেশে মোট ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, রাজধানীসহ সারাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মহামারী করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে দেশের সীমান্ত এলাকায়। ওইসব সীমান্ত এলাকার জেলাগুলোতে চলছে লকডাউন। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেছে রাজধানী ঢাকার পাশের সাত জেলায়। তাই করোনাভাইরাসের শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়ে রাস্তায় মানুষও চলাচল করতে পারবে না। শুধু জরুরি সেবা ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

কঠোর লকডাউনের আওতায় থাকা ৭ জেলা হলো নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ। এসব জেলায় আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ৩০ জুন বুধবার পর্যন্ত কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে। এ সময়ে সব ধরনের গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে পণ্যবাহী ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

সোমবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, অন্য কোনো জেলা প্রশাসন চাইলে লকডাউন দিতে পারবে।

তিনি আরো জানান, লকডাউন চলাকালে সার্বিক কার্যাবলি চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) সকাল ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সময়ে শুধু আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/ জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/ লরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

এই ৭ জেলায় কী কী বন্ধ থাকবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সব বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। শুধু মালবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু চলবে না। জেলাগুলো ব্লকড থাকবে, কেউ ঢুকতে পারবে না।

অপরদিকে, গতকাল সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ৬২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরো ৪ হাজার ৬৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। দেশে মোট ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ৮২৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ৭ লাখ ৮৫ হাজার ৪৮২ জন করোনা থেকে সুস্থ হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২৮টি ল্যাবে ২৪ হাজার ৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা সংগ্রহ করা হয় ২৪ হাজার ৫০৯টি। নমুনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। এই পর্যন্ত নমুনা শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৭৮ জন মৃত্যুবরণকারীর মধ্যে পুরুষ ৫৬ জন ও নারী ২২ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছে নয় হাজার ৭৬৮ জন ও নারী তিন হাজার ৮৫৮ জন। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে আটজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২৩ জন ও ষাটোর্ধ্ব ৩৯ জন রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৫ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, বরিশাল বিভাগে তিনজন, সিলেট বিভাগে দুজন, রংপুর বিভাগে নয়জন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালে ৬৩ জন, বেসরকারি হাসপাতালে নয়জন ও বাসায় ছয়জন মারা গেছে।

দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ওই বছরের ১৮ জুন তিন হাজার ৮০৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে লাখ ছাড়িয়েছিল করোনার রোগী। সেদিন পর্যন্ত মোট শনাক্ত ছিল এক লাখ দুই হাজার ২৯২ জন। এ ছাড়া দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত বছরের ১৮ মার্চ।









আরও খবরঃ https://www.anmnews.in/Home/GetNewsDetails?p=3522/  https://www.anmnews.in/Home/GetNewsDetails?p=3510

For more details visit www.anmnews.in

Follow us at https://www.facebook.com/newsanm