দেবাশিস বিশ্বাস, কোচবিহারঃ “তখন পূর্ব পাকিস্তান ছিল কিনা মনে নেই”,পরিষ্কার গলায় স্পষ্ট আওয়াজে জানালেন তিনি। "১১ বছর বয়সে বিয়ে হয়, তার পর থেকেই এই কাজ শুরু। স্বামী শ্বশুরের সাথে ৮০ বছর আগেই কোচবিহারে চলে আসি। তারপর থেকে এখানেই স্থায়ী বাসীন্দা। শ্বশুর মশাই প্রয়াত যতীন্দ্র মোহন পাল কাজ শেখাতে শুরু করেন,কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ন ভুপ বাহাদুর নিজে কাজ দিয়েছিলেন অনেক বার। এখোনো কাজ করি, কাজ না করলে ভালো লাগে না।”- ঠিক এমন টাই জানালেন কোচবিহারের প্রবীনা মৃৎশিল্পী বিষ্ণুপ্রিয়া পাল (৯৭)।
কাঠের সিড়ি বেয়ে ঠিক দোতালার ঘরে গিয়ে দেখি তখনো তার হাতে তুলি,অন্য হাতে মায়ের মুখ। তিনি বললেন “আর তো কয়েকটা দিন বাকি তাই হাতের কাজ সেরে রাখছিলাম।” প্রতি বছরে প্রায় ২০০ প্রতিমার রং করেন তিনি। আগের তুলনায় এখন কাজের সংখ্যাটা অনেক বেশি। আগে কোচবিহার শহরে মহারাজার পুজো বাদে, নিত্যানন্দ অশ্রম, রামকৃষ্ণ আশ্রম, ধর্ম সভা, হরিসভার পুজো হতো। এখন শহরেই প্রায় ৬৭টির বেশি পুজো হয়। চাপ অনেক বেশি তবে কি প্রয়জন মতো জোগান নেই আজও। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী জানান তার শ্বশুর মহাশয়ের কাছেই মাটির কাজের হাতেখড়ি তাঁর।শ্বশুর মহাশয় বাংলা বিহার আসামের মধ্যে একজন বিখ্যাত শিল্পী ছিলেন।দেবী দুর্গার মুখের পাশাপাশি মনষা দেবী- অষ্টনাগ- সরস্বতী-লক্ষী প্রতিমার কাজ এখনো করেন তিনি। লক্ষীর পট আঁকতে সে এখোনো নৃপুনা।বয়সের নিরিখে তিনিই জেলা শহরের সবথেকে প্রবীনা শিল্পীদের তালিকায় প্রথম।