New Update
এম সাদরুল আহমেদ খান, বাংলাদেশঃ শুভ জন্মদিন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অপূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দেশবাসীর জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে কূটনৈতিক চমক দেখিয়েছেন,বস্তুচ্যত রোহিঙ্গা মুসলিম জনগণকে আশ্রয় দিয়ে হয়েছেন মাদার অফ হিউমিনিটি । নারীর ক্ষমতায়নে রেখেছেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ভূমিকা রেখেছেন, রেখেছেন বলিষ্ঠ কন্ঠ । তিনি বিশ্বের অন্যতম সৎ ও পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা। তার সঠিক নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্বে এখন “ডেভিল্পমেন্ট মডেল” হিসেবে গণ্য করছে।
১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর টুগ্ণগিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি । শৈশব কেটেছে সবুজে বিস্তৃত গ্রামে, আর সেকারণেই হয়তো তিনি প্রকৃতির মতই উদার ও সরল । বাবা ভক্ত মেয়ে শেখ হাসিনা, ১৯৫৪ সালে পরিবারের সাথে ঢাকায় চলে আসেন। হয়তো শিশু মনে স্বাদ ছিল বাবার সাথে সাথে থাকবেন, কিন্তু বিধি বাম, তার বাব শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাগারের স্থায়ী বাসিন্দা, কেননা বঙ্গন্ধুর জীবনের প্রায় ১২ বছর কেটেছে জেল খানায় । মাঝে মধ্যে সন্তান পরিবারের সাথে থাকার সুযোগ পেতেন । জাতীর জন্য ব্যক্তি জীবনের এতো বড় ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন বলেই একটি পরিবারের পিতা থেকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন পুরো জাতীর পিতা ।
শিশু বয়স থেকেই শেখ হাসিনা বাবাকে খুব খেয়াল করতেন, বাবার কাজে আগ্রহ দেখাতেন,অনুকরণ করার চেষ্ঠা করতেন । বাবার নেতৃত্বের গুনে ছাত্র জীবন থেকেই শেখ হাসিনার ধমনীতে প্রবাহিত ছিল রাজনীতি। তাই ছাত্র জীবনেই তিনি রাজনীতিতে নাম লেখালেন। ইডেন কলেজে নির্বাচিত ভিপি ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়ন কালেও তিনি রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন । রোকেয়া হল ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৮ সালে ডঃ ওয়াজেদ আলীর সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ।
১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার পর মুহূর্তে গ্রেফতার হবার আগে বঙ্গবন্ধু তার মেয়ে শেখ হাসিনাকে বলে যান, সবাধীন দেশে তোর একটি ছেলে সবন্তান হবে তার নাম রাখবি জয়, সেটাই হল । শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজিব ওয়াজেদ জয়(মাননীয় উপদেষ্টা) এবং দ্বিতীয় কন্যা শিশু সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (বিশিষ্ট অটিজম এক্সপার্ট) ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে জিয়া- মস্তাকের নীল নকশায় আমরা বঙ্গবন্ধু পরিবার কে হারালাম ,তবে বেলজিয়াম থাকার সুবাদে অলৌকিকভাবে ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে প্রাণে বেচে গেলেন শেখ হাসিনা । বেলজিয়ামের রাস্ট্রদূত সানাউল হক এক রাতের ব্যবধানেই তার রাস্ট্রীয় অতিথি কে রাস্তায় বের করে দিলেন । অবশ্য জার্মানির রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সেসময় সাহায্য করেন, বেলজিয়াম সীমান্তে গাড়ি পাঠিয়ে জার্মানিতে নিয়ে আসেন । কিন্তু নিরাপত্তা শংকায় শেখ হাসিনা, ছোট বোন শেখ রেহানা আর দুবাচ্চাসহ ভারতের প্রাধান মন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর প্রাস্তাবে দিল্লীতে চলে আসেন । শুরু হল নেত্রীর শরণার্থী জীবন। খুনীদের নিশানায় থাকায় নিজের নাম পাল্টে একটি ঘরে দিন কাটাতে থাকেন। শেখ রেহানা সহ ও পরিবর্তিতে দু;সন্তান পড়ালেখা করতে যুক্তরাজ্যে চলে গেলে তিনি একা হয়ে পড়েন। Pain made her a believer বাবার রাজনীতির উত্তরাধিকার, বাবার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ আর বাবার হত্যাকারীদের বিচারের আওত্তায় আনতে তিনি দৃপ্ত শপথ নিলেন ।
এদিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তখন ভাঙ্গনের খেলা, সামরিকজান্তারা পাকিস্থানী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। They made politics difficult for the politicians. ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতেতেই তাকে আওয়ামি লীগের সভাপতি মনোনীত করা হয়। ১৭ মে ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরলেন। শুরু হল নতুন সংগ্রাম। শোক কে শক্তিতে রূপান্তর করে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরোদ্ধে আন্দোলনে নামলেন। “ স্বৈরাচার নিপাক যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক”। ৯ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের ফলে ১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ সরকারের পতন হল । ১৯৯১ সালের নিরবাচনে সুক্ষ কারচুপির মাধ্যমে বি এন পি ক্ষমতায় আসলে, শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বিরোধী দলীয় নেত্রীর ভুমিকা পালন করলেন।
১৯৯৬ সালের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান মন্ত্রী হলেন।
এ সময়ে উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তির মধ্যে ছিল গঙ্গা পানি চুক্তি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মান, বিধবা, দুঃস্থ, আসহায় মহিলাদের জন্য আর্থিক অনুদান চালু, গৃহহীনদের জন্য আশ্রায়ন প্রজেক্ট চালু ইত্যাদি।
২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামাত জোট সরকার গঠন করলে, শেখ হাসিনা তথা বাংলাদেশের অস্থিত্য হুমখীর সম্মুখীন হয়, চলে দেশ ব্যাপী গুম-খুন, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলার ঘ্ঠনা । তারেক রহমানের পরিকল্পনায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রানে বেচে যান শেখ হাসিনা কিন্তু হারাতে হয় অনেক কাছের নেতা কর্মীদের। এরশাদ –খালেদার শাষন আমলে মোট ১৯ বার হত্যা চেষ্টা চলে শেখ হাসিনার উপর। কিন্তু “রাখে আল্লাহ, মারে কে ?”
২০০৬-০৮ তত্তাবধায়কের নাম করে উড়ে এসে জুরে বসে আরেক অরাজনৈতিক সরকার । তাদের কাছে নির্বাচন দাবী করলে অন্যায়ভাবে জেলে যেতে হয় শেখ হাসিনাকে। জেল থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি বের হলেন এবং ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করল । এসময়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল মায়ানমারের সাথে জলসীমা মীমাংসা, জি ডি পি ৬% উন্নীত, দারিদ্রতার হার ৩৮% থেকে ২৪% ,জাতী সংঘ এমডিজি লক্মাত্রা অর্জন । তবে চ্যালঞ্জও ছিল অনেক, পিলখান হত্যাকান্ড বিচার সম্পাদন, নারী নীতি বিরোধী আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধী বিচার ও ফাসি কার্যকর। রানা প্লাজা অগ্নিকান্ড পরবর্তী আমেরিকা এবং ইউরোপিয়ান দেশ সমুহের সাথে একর্ড সম্পাদন
২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বি এন পির আগুন সন্ত্রাসের জবাবে জনগণ আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনলে শুরু হয় উন্ন্য়নের মহাকাব্য। এসময়কার সাফল্যগুলি ছিল, ডিজিটাল বাংলাদেশ, মাথা পিছু আয় ১৬০২ মার্কিন ডলারে উন্নীত, দারিদ্রতার হার ২৪% থেকে ২২%, ফরেন রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নিরমান কাজ শুভ সূচনা, রাম পাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ,রুপ পুর বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ শুভ উদ্বোধন, সাবমেরিন ও স্যটেলাইট যোগে প্রবেশ ইত্যাদি। এসময় বড় চ্যালেঞ্জ ছিল হলী আরটিসানসহ সারাদেশে জঞগী দমন, ১০ লক্ষ্যাধিক রহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় দান, মানবতার জননী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন , Sheikh Hasina is a great leader, who is visionary, honest and also humble.
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগ এর উন্নয়নের যাত্রা পূর্ণ গতি পেল। কিন্তু হানা দিল করোনা ভাইরাস, এখানেও রাস্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা চমক দেখালেন । বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র যখন হিমশিম খাচ্ছে, বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতি এমন সংকটময় পরিস্থিতিতেও ৭৫ বছর বয়সের এই মহামানবী করোনা মহামারী মোকাবিলায় “ভ্যাক্সিন ডিপ্লমেসিতে” সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছেন “Sheikh Hasina is a leader who leads by setting example” । বারবার দেশের মানুষকে অ্যাড্রেস করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে নিজেকে এবং অন্যকে করোনা থেকে সুরক্ষার নির্দেশনা দিচ্ছেন। নিয়মিত তৃণমূল প্রশাসনকে দিকনির্দেশনা দিয়ে তদারকি করছেন। বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করে দেশের অর্থ নীতির চাকা সচল রেখেছেন । এসময়ে দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে, মাথাপিছু আয় ২,২২৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে।শিশু মৃত্যু হার প্রতি হাজারে ২৩ দশমিক ৬৭-এ কমে এসেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। সুদান ও শ্রীলংকাকে অর্থ ঋন সহায়তা দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে। Sheikh Hasina’s leadership has the capacity to translate vision into reality এরই মধ্যে ২০২১-২২ অর্থ বৎসরে ৩ হাজার ৬ লক্ষ ৬৮১ কোটি টাকার রেকর্ড গড়ার বাজেট দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার ।ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে সম্পন্ন হয়েছে । পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক, মেট্রোরেল, দুহাজারী-কক্সবাজার রেল, পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে । সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ২৬টি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান আছে,এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করার কাজ এগিয়ে চলছে। মেট্ররেল ট্রায়াল রান শুরু হয়েছে। দুহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইনের কাজ চলছে । ঢাকা এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ চলছে। পায়রা বন্দর এবং গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ চলছে । শাহজালাল বিমান বন্দরের ৩য় পর্যায়ের কাজ চলছে । মুজিব বর্ষের উপহার আশ্রায়ন প্রক্লপের ঘর, দেশ ব্যাপী মডেল মসজিদ এসবই শেখ হাসিনার দক্ষ দিক নির্দেশনায় উন্নয়নের মহাসড়কে ব্দলে যাওয়া এক বাংলাদেশের চিত্র।
শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত রাষ্ট্রনায়ক। তিনি একাধিক সম্মাননায় ভূষিত,মাদার তেরেসা এ্যাওয়ার্ড, ইন্দিরা গান্ধী পিস এ্যাওয়ার্ড, ইউনেস্ক পিস ট্রি এ্যাওয়ার্ড, চ্যাম্পিয়ন আব আর্থ , ইস্টার অব ইস্ট ইত্যাদি।
শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানেই বাংলার আধুনিক রুপ।Sheikh Hasina knows the way, shows the way and goes the way প্রিয় নেতৃর জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।