নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নরূপে অবতীর্ণ হন মা দুর্গা। কোথাও বাসন্তী, কোথাও ছিন্নমস্তা, কখনও বা বগলা। ঠিক সেভাবেই কোচবিহারের রাজবাড়িতে 'বড়দেবী' নামে অবতীর্ণ হন দেবী দুর্গা। এখানে দুর্গার সঙ্গে থাকেন না লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী।প্রতিমার দু'পাশে থাকে জয়া ও বিজয়া। রক্তবর্ণ দেবী আজও নররক্তেই তুষ্ট হন। আর নিয়ম মেনে আজও চলে গুপ্তপুজো।
কোচবিহার রাজবাড়ি বড়দেবী দুর্গার চেহারা উদ্রেককারী। তাঁর গাত্রবর্ণ লাল, অসুরের গাত্রবর্ণ সবুজ। দেবীর বাহন সিংহ ও বাঘ। অসুরের পায়ে কামড়ে ধরে থাকে সিংহ আর অসুরের হাতে কামড় বসিয়ে থাকে বাঘ। মহালয়ার পরদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় বড়দেবী দূর্গা পুজো। মহাষষ্ঠীর দিন থেকে পুজো পুরোমাত্রায়। কথিত রয়েছে, একদা রাজবাড়িতে নরবলির প্রচলণ ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে নরবলির বীভত্সতা দেখে কোচবিহারের ১৯তম কোচ মহারাজা নরেন্দ্র নারায়ণ ভূপ পন্ডিতদের সঙ্গে আলোচনা করে নরবলি বন্ধ করে দেন। যদিও বড়দেবী নররক্ত ছাড়া পুজো না নেওয়ায় প্রতি বছর অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে রাতে এখানে এক বিশেষ ধরনের বলির ব্যবস্থা করা হয়। সেসময় বাইরের কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে না। কামসানাইট উপাধিধারী প্রতিনিধি তাঁর আঙুল কেটে কয়েক ফোঁটা রক্ত দেন দেবীর পদতলে। বলি দেওয়া হয় চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি মানুষের প্রতীক একটি পুতুলকে। উচ্চস্বরে বাজে ঢাক। এই পুজোকেই 'গুপ্তপুজো' বলা হয়। তবে প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোচবিহার রাজপরিবারের সদস্যদের দেখা নিষিদ্ধ বলে তারা এই বিসর্জনে থাকেন না।