টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে উন্নত দেশগুলোর ভূমিকা চান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

author-image
Harmeet
New Update
টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে উন্নত দেশগুলোর ভূমিকা চান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

হাবিবুর রহমান, ঢাকা: আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে​অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সব অংশীজনের সঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্বের প্রধান
অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো
বাইডেনের ডাকা ‘মেজর ইকোনমিজ ফোরাম অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট’ শীর্ষক
উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে পূর্বে ধারণ করা ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রধান
অর্থনীতির দেশগুলোকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী সব অংশীজনের
সঙ্গে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ফোরামের বিবেচনার জন্য ছয় দফা প্রস্তাব রাখেন। প্রথম
প্রস্তাবে তিনি প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা
বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যে তাদের কার্বন
নির্গমন হ্রাস করার জন্য পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, জলবায়ু
তহবিলের জন্য উন্নত দেশগুলোর বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার পূরণ
করতে হবে এবং অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০ অনুপাত ৫০ বিতরণ করতে হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি
হস্তান্তরের পাশাপাশি সবচেয়ে কার্যকর জ্বালানি সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসার
জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
চতুর্থ প্রস্তাবে তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উত্তরণের
ক্ষেত্রে, জাতি-রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর হিসাব
নেওয়া এবং তাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লোকসান ও ক্ষতির বিষয়গুলো বিবেচনা
করা উচিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পঞ্চম প্রস্তাবে
বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীর ভাঙন, বন্যা
ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সব দেশের ভাগ করে
নেওয়া দরকার।
আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ২৬ সম্মেলনে দৃঢ় ও তাৎপর্যপূর্ণ
ফল কামনা করেন শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করার জন্য বিশ্বের প্রধান অর্থনীতিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ
দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি,
নদী ভাঙন, বন্যা ও খরার প্রভাব ছাড়াও ১১ লাখ রোহিঙ্গা জোরপূর্বক মিয়ানমার
থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ গুরুতর জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখিন
হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় তার সরকার অগ্রণী
হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি
উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও হালনাগাদকৃত এনডিসি জমা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বাধিক বিস্তৃত
অভ্যন্তরীণ সৌরশক্তি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ‘মুজিব জলবায়ু
সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, যা জলবায়ু ঝুঁকি থেকে জলবায়ু
সহিষ্ণুতা এবং তা থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধি পর্যন্ত একটি যাত্রা। জলবায়ু ঝুঁকি
ফোরাম (সিভিএফ) ও ভি-২০’র সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো
বলেন, বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ
তুলে ধরা।