হরি ঘোষ, দুর্গাপুর: যুবকের রহস্য মৃত্যু। খুনের অভিযোগ পরিবারের। মৃতদেহ নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা। তদন্তে পুলিশ।বাড়ী থেকে একটু দূরে সেচখাল থেকে উদ্ধার দেহ।
মৃত যুবকের নাম মানস ভদ্র (২৮)। দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত নডিহার বাসিন্দা।
পরিবারের অভিযোগ, সোমবার রাত্রি নটা নাগাদ মোবাইলে ফোন আসে। তারপরে ঘর থেকে বেড়িয়ে আর ফেরেনি সে। অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনায় এখন মানসের পরিবারের লোকজন খুনের অভিযোগ করছেন। সেই কথা পুলিশকেও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানসের পরিবার। বুধবার সকালে কোকওভেন থানার পুলিশ সেচ খালের সামনে থেকে মানসের মোবাইল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।এখন এই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
দিন পনেরো আগে মানস ভদ্রের বাড়ীতে জনা কয়েক ছেলে এসে তাকে দেখা করার জন্য বলে যায়। মানস এদের একজনকে ফোন করলে সে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। মানসের মায়ের অভিযোগ, ছেলেকে খুন করা হয়েছে। পাশাপাশি মানসের মা ও মেসোর অভিযোগ, একটি মেয়ের সাথে ফোন মারফত সম্পর্ক তৈরী হয় মানসের। সেই মহিলা তাকে নানাভাবে মানসিক চাপ দিচ্ছিল, হতে পারে এই কারণে মানসের এই মৃত্যু। মানসের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে বলে দাবি পরিবারের। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরী হয়েছে শহর দুর্গাপুরে।
মানসের বাবার অভিযোগ, স্থানীয় ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেই থাকতো মানস, যতদিন চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে ছিল ততদিন মানসও তৃণমূলে ছিল। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত নগর নিগমের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াতে মানসও তখন বিজেপিতে চলে আসে। মৃত মানস ভদ্রকে দলীয় কর্মী বলে দাবি করেন দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, যেভাবে রাজ্যে বিরোধীদের ওপর অত্যাচার চলছে তাতে করে এই ঘটনায় পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।
অন্যদিকে তিন নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শিপুল সাহা বলেন, “মৃত যুবক মানস ভদ্র তৃণমূলেই ছিল, এখনও সে তৃণমূল কর্মী। পুলিশ তদন্ত করুক, কিন্তু বিজেপি যে অভিযোগ আনছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে রয়েছে, পুলিশ সেটা তদন্ত করুক।“
কিন্তু মানসের মৃত্যু আত্মহত্যা, নাকি রাজনৈতিক খুন সে বিষয়ে তদন্ত করছে কোকওভেন থানার পুলিশ।