বন্ধ বিদ্যালয়ের দরজা, দূরত্বে মন খারাপ ছাত্র-শিক্ষকদের

author-image
Harmeet
New Update
বন্ধ বিদ্যালয়ের দরজা, দূরত্বে মন খারাপ ছাত্র-শিক্ষকদের

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিনে প্রতিবছর পালিত হয় শিক্ষক দিবস। বিদ্যালয়গুলির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাইভেট কোচিং সেন্টারেও দিনটি পালিত হয়। ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে দিনটির মাহাত্ম্য অনেক। গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর দিনটিতে বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র- শিক্ষকদের মধ্যে বন্ধুর সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। অন্যান্য দিনগুলিতে শিক্ষকদের প্রতি ছাত্রদের ভয়ভীতিও উধাও হয়ে যায় দিনটিতে। সেই সব চিত্র এবারে 'গৃহবন্দী'। করোনার জেরে বহুদিন বন্ধ বিদ্যালয়ের দরজা। তাতে দূরত্ব বাড়ছে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কেও। আবার শিক্ষক দিবসে বিদ্যালয় থেকে দূরে 'গৃহবন্দী' থাকতে হওয়ায় মন খারাপ ছাত্র-শিক্ষক উভয়েরই। সোশ্যাল মাধ্যমে শিক্ষকদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে অনেকে। তাতে কি আর অন্তরের ব্যথা ঘোঁচে! শিক্ষক তাপস মাঝি, বিপ্লব মাহাতদের কথায়, চোখের সামনে দিনগুলি ভেসে উঠছে। মন ভীষণ খারাপ। বিদ্যালয় থেকে দূরে থাকায় একই অবস্থা ছাত্রদেরও। তবে যাদের প্রাইভেট টিউশন রয়েছে। তারা দিনটি প্রাইভেট শিক্ষকদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পালন করছে। ছাত্র সুকমল মাইতি, সঞ্জয় জানারা বলেন, প্রাইভেট টিউশনে পালন হলেও বিদ্যালয়ের দিনগুলি ভোলার নয়। শুধু শিক্ষক দিবসে নয়, দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাড়ছে ছাত্র-শিক্ষক দূরত্বও। গুড়গুড়িপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রলয় বিশ্বাস জানান, দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাড়ছে দূরত্ব। এটা অত্যন্ত কষ্টের। আগামীদিনে কি পর্যায়ে দাঁড়াবে জানি না। তিনি বলেন, 'শিক্ষক দিবসে শিক্ষক হিসেবে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি কি করতে পেরেছি। দিনটিতে ছাত্রদেরও সুযোগ থাকে তারা কি হতে চাই বা বলতে চাই।' 'শিক্ষক দিবস ছাত্র-ছাত্রীদের মিলনের জায়গা। এই দিনটিতেই শিক্ষকদের শিক্ষক ছাড়াও অন্য ভাবে দেখা যায়। শিক্ষকরা সাধারণভাবে বন্ধুর মতো মিশে যায়। অন্যদিকে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে যোগ দিচ্ছে কাজে। অল্প বয়সে অনেক ছাত্রীর বিয়ের ঘটনাও ঘটছে। বিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ থাকায় আরও বেশি মন খারাপ সাংস্কৃতিক কর্মসূচীর দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সারাদিনের ব্যস্ততায় নিঃশ্বাস নেওয়ারও সময় থাকে না। অথচ আজ গৃহবন্দি'। এমনই শোনালেন চাঁদড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অন্তরা ঘোষ। তিনি বলেন, 'সারাদিনের ব্যস্ততায় সময় যেন তাড়াতাড়ি পেরিয়ে যেত। অথচ আজ সময় কাটছে না। বাড়িতেই রয়েছি। বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকায় ছাত্র ছাত্রীদের আনাগোনা লেগেই থাকত। অন্যান্য দিনের থেকে শিক্ষক দিবসের দিন আরও কাছাকাছি আসত ছাত্র-ছাত্রীরা।' তবে এই মন খারাপের দিন শেষ হোক, খুলুক বিদ্যালয়ের দরজা চাইছেন ছাত্র-শিক্ষক সকলেই।