টেন্ডার জমাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে

author-image
Harmeet
New Update
টেন্ডার জমাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে



নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দ্রকোনাঃ 
গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের টেন্ডার জমাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল চন্দ্রকোনার বান্দিপুর ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যেতে হল পুলিশকে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে নিজের পছন্দ মতো কন্ট্র্যাক্টরদের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুললো এক পঞ্চায়েত সদস্য। তবে পাল্টা পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধে কাজ না করা কন্ট্র্যাক্টরদের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার দাবি তুলে কার্যালয়ে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ তুললেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে টেন্ডার জমাকে কেন্দ্র করে শাসক দলের পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্যর দ্বন্দ্বকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপির। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ নং ব্লকের বান্দিপুর ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। জানা যায়, আজ মঙ্গলবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে পঞ্চায়েতের কাজের জন্য টেন্ডার জমা নেওয়া হচ্ছিল। আর এই টেন্ডার জমা নেওয়াকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়,এমনকি হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায় এই ঝামেলা এমনই অভিযোগ উঠছে। খবর পেয়ে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যেতে হয় চন্দ্রকোনা থানার পুলিশকে। টেন্ডার জমাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনায় নাম জড়িয়েছে শাসক দলের চন্দ্রকোনা ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ ও বান্দিপুর ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য নীলকমল পন্ডিতের। নিজেদের পছন্দ মতো কন্ট্র্যাক্টরদের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে একে অপরের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত সদস্য নীলকমল পন্ডিত প্রশ্ন তোলেন, 'পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তার অফিস ছেড়ে দিয়ে আজ গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে বসে কী করছেন? আজ তো টেন্ডার প্রক্রিয়ায় হার্ড কপি জমা দেওয়ার তারিখ।' পঞ্চায়েত সদস্য অভিযোগ করেন, 'কয়েকজন কন্ট্র্যাক্টর টেন্ডারের হার্ড কপি জমা দিতে গেলে বাধা দেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ'। এমনকি ওই কন্ট্র্যাক্টরদের বের করে দেওয়া হয় এবং মারধরও করা হয় বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রধানকে ব্যবহার করে নিজে থেকে অশান্তি সৃষ্টি করছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলে অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েত সদস্য নীলকমল পন্ডিত। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ অভিযোগ করেন, "পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই গন্ডগোল বাঁধানো হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতেরই এক পঞ্চায়েত সদস্য নীলকমল পন্ডিত দুজন কন্ট্র্যাক্টরদের নিয়ে আসে তাদের টেন্ডার জমা দেওয়ার জন্য। ওদের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েত সদস্য কেনো এতো সচেষ্ট উনিই বলতে পারবেন। তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনও কন্ট্র্যাক্টর আগের দেওয়া কাজ অসম্পূর্ণ রাখলে তাদের পুনরায় কাজ দেওয়া হবে না তা আগেই সব কন্ট্র্যাক্টরদের ডেকে মিটিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর পঞ্চায়েত সদস্য যে দু'জন কন্ট্র্যাক্টরদের নিয়ে এসে অভিযোগ করছে ওই দুজন কন্ট্র্যাক্টরদের তাদের দেওয়া আগের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। আর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে আমি গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের কাজ দেখভাল করতেই পারি।" যদিও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সুরেই সুর মিলিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান স্নিগ্ধা ঘোষ। টেন্ডার জমা নেওয়াকে কেন্দ্র করে শাসক দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্যর দ্বন্দকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। চন্দ্রকোনার বিজেপি নেতা রাজীব পাল জানান, 'সারা বাংলা জুড়েই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল লেগে রয়েছেল। আসলে এসব নিজেদের মধ্যে কে কত বেশি কাটমানি খাবে তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। সাধারন মানুষ এদের জন্য ভুগছে, কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে থাকছে।"