নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ভারত মাতার সাহসী বীর বিপ্লবী সুভাষচন্দ্রের অত্যন্ত অন্তরঙ্গ ছিলেন তাঁর মেজ দাদা শরৎচন্দ্র বসু। দু’জনেই অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু তাঁদের সেই ব্যস্ততাময় জীবনের সাথে ছিল নানান টুকরো কাহিনী। সুভাষচন্দ্র বারংবার তাঁর দাদাকে দেখেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। ভারতীয় জাতীয় সেনা বাহিনী গঠনের পিছনে নেতাজিকে মানসিক এবং সর্বতোভাবে সমর্থন করেছিলেন তাঁর এই মেজ দাদা। তৎকালীন সময়ে শরৎচন্দ্র বসু ছিল দিল্লি সরকারের কাছে এক প্রকারের ভয়ের মত।
সেই সময়কার সরকার ভাবত, নেতাজি সুভাষচন্দ্রের সমস্ত কর্মকাণ্ডের পিছনে মূল উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছেন শরৎচন্দ্র বসু । কিন্তু তা একেবারেই ভুল ছিল। শরৎচন্দ্র বসুর মূল লক্ষ্য ছিল, যে বিপ্লবীরা বিনা দোষে স্বদেশী আন্দোলনের জন্য জেলে যাবেন তাদের হয়ে তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে লড়াই করবেন। তবে তিনি নেতাজির নানান কর্মকাণ্ড বা খবর গোপনে আদান প্রদান করতেন।
নেতাজির বিমান দুর্ঘটনার পর শরৎ বসু কখনোই বিশ্বাস করতে চাননি যে সেই দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে। তিনি রীতিমত প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেছিলেন নেতাজির বিশ্বস্ত সঙ্গী হাবিবুর রহমানকে। হাবিবুর রহমান যখন নেতাজি ভবনে আসেন, তখন তাঁকে একের পর এক জেরা করেন শরৎ বসু। হাবিবুর রহমান জানিয়েছিলেন, তিনি নাকি চেষ্টা করেছিলেন নেতাজিকে আগুনের হাত থেকে বাঁচানোর এবং তাই তাঁর হাত যথেষ্ট পুড়ে যায়। অথচ তাঁর সেই হাতে সামান্য মাত্র পুড়ে যাওয়ার দাগ ছিল। তাই শরৎ বসু কিছুতেই সেই কথা বিশ্বাস করতে চাননি। তখন হাবিবুর তাঁর হাতে একটি ঘড়ি তুলে দেন , যেখানে একটু পোড়া দাগ ছিল। পরে ঘড়িটি ল্যাবরেটরিতে টেস্ট করে দেখা যায় ঘড়ির বেল্টের পোড়া দাগ অ্যাসিড থেকে সৃষ্টি হয়েছে। অথচ সেই ঘড়িটি আদৌ নেতাজির কিনা তারও কোন যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নেতাজি আর শরৎ বসুর মধ্যে সম্পর্ক ছিল বিশ্বাসের বন্ধনে আবদ্ধ , পাশাপাশি ছিল স্নেহের আবেশ।