প্রিন্সিপালকে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের

author-image
Harmeet
New Update
প্রিন্সিপালকে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : রুমের ভিতর প্রিন্সিপাল আর প্রিন্সিপালের রুমে তালা লাগিয়ে কলেজে বিক্ষোভে সামিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ঘাটালের সাংসদ দেব, তারই প্রতিনিধি রামপদ মান্না, এই রামপদ মান্নার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সহ ৮ দফা দাবিতে প্রিন্সিপালের রুমে তালা দিয়ে বিক্ষোভে সামিল শাসকদলেরই ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য কলেজ চত্বর জুড়ে।

এমনই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের। মূলত ৮ দফা দাবি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এদিনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি বলে দাবি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মীদের।তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, কলেজের জিবি মিটিংয়ে(গভর্নিং বডি) সাংসদ দেবের প্রতিনিধি রামপদ মান্নাকে ডাকা হয় কেন? ছাত্র-ছাত্রীদের টাকা নিয়ে কলেজে রক্তদান শিবির করা হয়েছে কেন? এছাড়াও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা কলেজ ক্যাম্পাসে লাগাতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ খোদ শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের। এছাড়াও ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের ভাইপোকে বেআইনিভাবে অনার্স করানোর অভিযোগও তুলেছে বিক্ষোভকারী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। এমনই একাধিক দাবি নিয়ে এদিন ঘাটাল কলেজের প্রিন্সিপালকে ঘেরাও করে বিক্ষোভে সামিল হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। শুধু তাই নয়, রীতিমতো প্রিন্সিপালের রুমে তালা দিয়ে বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের। খোদ শাসকদলের ছাত্র সংগঠন দলেরই সাংসদ প্রতিনিধির নানা বিষয়ে কলেজে হস্তক্ষেপের বিরোধীতা করে। এভাবে প্রিন্সিপালের রুমে তালা দিয়ে বিক্ষোভের ঘটনায় রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে ঘাটালে।ঘাটাল লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ দেবের  প্রতিনিধি রামপদ মান্না।সাংসদ প্রতিনিধির বিরুদ্ধে খোদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের তোলা একাধিক অভিযোগ প্রসঙ্গে রামপদ মান্না জানান, তিনি সাংসদ প্রতিনিধি সাংসদের উন্নয়নমুলক কাজ দেখভাল করেন রাজনীতির বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না। সাংগঠনিক বিষয়ে যা বলার ব্লক সভাপতি বলবেন।তবে তার বিরুদ্ধে কেন দলেরই ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মীদের এই বিক্ষোভ, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি।তবে তিনি বলেন,ঘাটাল কলেজে গভর্নিং বডির মিটিংয়ে তার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তিনি কোনও গভর্নিং বডির মিটিংয়ে কোনও দিনই ছিলেন না, এটা ভুল অভিযোগ করা হচ্ছে। কলেজের প্রিন্সিপাল মন্টু কুমার দাস জানান, 'যেহেতু কলেজের প্রেসিডেন্ট সাংসদ দেব, তাই তার প্রতিনিধি হিসেবে রামপদ মান্নার হাত দিয়ে কলেজের কিছু কাগজপত্র সাংসদের কাছে যায় সেই কারণে তিনি কলেজেও আসেন।ওরা আগে কেউ কখনও জানায়নি, কেনো রামবাবু আসছেন, তাহলে আমি বলে দিতাম।'বাকি দাবিদাওয়া বা অভিযোগ প্রসঙ্গে অস্বীকার করেছেন প্রিন্সিপাল মন্টু কুমার দাস।ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট এবিষয়ে বলেন, 'কারও ক্ষমতা নেই ভাইপোকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ তার যা নম্বর রয়েছে তাতে সে অনার্স পাওয়ার যোগ্য।আর আপনারা যাদের অনার্স পাইয়ে দিয়েছেন তারা অর্নাস পাওয়ার অযোগ্য।তাই আমার দিকে আঙুল তোলার আগে আপনাদের দিকে তাকান, আপনারা টাকার বিনিময়ে শিক্ষা চাকরি বিক্রি করেছেন।' বিক্ষোভ চলাকালীন কলেজেরই এক অধ্যাপক ভিতরে ঢুকতে গেলে তাকে ঢুকতে না দেওয়ায় ওই অধ্যাপককে বিক্ষোভকারীদের সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এমনকি ওই অধ্যাপক গ্রিল ধরে লাথি মারতে থাকেন গেটে। আর এতে দু'জন বিক্ষোভকারী চোট পায়। তাদের কলেজের উল্টোদিকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।দীর্ঘ ঘেরাও বিক্ষোভের পর বিক্ষোভকারীদের নিয়ে আলোচনায় বসে কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানা যায়।