দিগ্বিজয় মাহালী: বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পাঁচ বছরের শিশুর অন্তর্ধান রহস্য আরও জটিলতায়। নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শিশুকে খুঁজে দেওয়া ও পুলিশের বাড়তি তৎপরতার দাবি করে অবরোধ বিক্ষোভ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। শনিবার সকাল থেকেই অবরোধে উত্তেজনা ছড়ায় মেদিনীপুর সদর ব্লকের নেপুরা এলাকায়। "মায়ের কোলে 'অরণ্য'-কে ফিরিয়ে দাও"- এই দাবিতে দীর্ঘক্ষণ মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম (ভায়া ধেড়ুয়া) সড়কের নেপুরাতে গ্রামবাসীদের অবরোধের জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়। পৌঁছায় গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশসহ জেলা পুলিশের আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে বাড়ির সামনেই খেলার সময় হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায় পাঁচ বছরের শিশু অরণ্য মাঝি। বাড়ি মেদিনীপুর সদর ব্লকের কঙ্কাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের নেপুরায়। পরিবার ও প্রতিবেশীরা চারিদিক খোঁজ চালালেও হদিস মেলেনি তার। ওই দিনই বিকেলে গুড়গুড়িপাল থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার। পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, মায়ের সঙ্গে স্নান করতে না গিয়ে ওই শিশুটি খেলায় মত্ত ছিল। মা স্নান করে বাড়ি ফিরে তাকে খোঁজ করলে আর খোঁজ মেলেনি। পাশাপাশি বিভিন্ন পুকুর, ডোবা এমনকি দূরের কংসাবতী নদীতেও খোঁজ চালায় পরিবারের লোকজন। কিন্তু নিখোঁজের পর তিন দিন কেটে গেলেও তার আর খোঁজ মেলেনি। এরপর পুনরায় পরিবারের লোকেরা বারবার করে পুলিশকে তৎপর হতে অনুরোধ করেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ তেমন তৎপর হচ্ছে না। তাই এদিন সকাল থেকে নেপুরা এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত অবরোধের জেরে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয় সেখানে। পরে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
বাড়ির আশেপাশে তল্লাশির জন্য আনা হয় কুকুর। ওড়ানো হয় ড্রোন। তারপরও কোনও সন্ধান মেলেনি অরণ্যের। স্থানীয় বাসিন্দা ফকির চন্দ্র বেরা বলেন, "শিশুটি চার দিন ধরে নিখোঁজ ৷ কিন্তু পুলিশের তৎপরতা সেভাবে চোখে পড়ছে না। আমরা পুলিশকে বাড়তি তৎপর হতেও বলেছি। সেভাবে পুলিশ ভ্রুক্ষেপ না দেখানোয় এই অবরোধ।" একই রকমের বক্তব্য স্থানীয় অন্যান্যদেরও। পরিবারের লোকেরা এদিন অবরোধের সামনে থেকে শুধুই কেঁদে চলেছেন। গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি।
উল্টে উত্তেজনা বাড়ে। ফের সেখানে হাজির হন জেলা পুলিশের ডিএসপি সব্যসাচী সেনগুপ্ত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকি দত্ত। তবুও গ্রামবাসীদের দাবি, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা শাসককে হাজির হয়ে দ্রুত সন্ধানের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। দুপুর দুটো নাগাদ কুকুর নিয়ে পুলিশের তল্লাশিতে অবরোধ তুলে নেন গ্রামবাসীরা। দ্রুত সন্ধান না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। পুলিশ জানিয়েছে, গুরুত্ব দিয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে পুলিশ। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।