চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ধুন্ধুমার হাসপাতাল চত্বর

author-image
Harmeet
New Update
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ধুন্ধুমার হাসপাতাল চত্বর

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতাল চত্বরে চরম বিক্ষোভ উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিডিও থেকে পুলিশ আধিকারিকরা।দফায় দফায় প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও হাসপাতালের গেটের সামনে প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা জমায়েত বিক্ষোভ করে মৃত শিশুর পরিবার পরিজনেরা।শেষমেশ পরিবারের তোলা সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দেন বিডিও তারপরই স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।এমনই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালের।


জানা যায় চন্দ্রকোনা পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ড মল্লেশ্বরপুর এলাকার বাসিন্দা বিজয় কিস্কু, তার দুই বছরের ছেলে সুরেশ কিস্কুকে জ্বর হওয়ার কারণে আজ দুপুর নাগাদ চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে,কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পরামর্শ দেয় শিশুটির শারীরিক অবস্থা উন্নতি করাতে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।চিকিৎসকদের পরামর্শ মত হাসপাতালে বিজয় তার ছেলেকে ভর্তি করলেও চিকিৎসক থেকে নার্সরা সুষ্ঠু পরিষেবা দেয়নি ছোট্ট শিশুটিকে এমনি অভিযোগ,এমনকি সন্ধ্যা নাগাদ ছোট্ট শিশুটি মারা যায়।আর এতেই পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে হাসপাতালে।হাসপাতাল চত্বরে তীব্র উত্তেজনা, পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছেন চন্দ্রকোনা দু'নম্বর ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষ,জয়েন্ট বিডিও অভিজিৎ পোড়িয়া থেকে শুরু করে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা।যদিও মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, শিশুটির শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলেও একাধিকবার চিকিৎসকদের কল দেওয়া হলেও চিকিৎসকরা শিশুটিকে দেখতে যাইনি।মৃত শিশুর বাবা বিজয় কিস্কুর অভিযোগ,হাসপাতালে ভর্তির পর স্যালাইন দেওয়া হয় তার ছেলেকে আর তারপরই ছেলের কাঁপুনি আসে এবং পরক্ষণে শারীরিক অবনতি ঘটতে থাকে।এমন সময় নার্সদের জানালে গুরুত্ব দেয়নি নার্স,পরে পরিবারের চাপে পড়ে চিকিৎসককে কল দেওয়া হয়।চিকিৎসক সেই মুহূর্তে জরুরি বিভাগে ছিলেননা বলে দাবি পরিবারের।কিছুক্ষণ পরে একজন চিকিৎসক এলেও তার বিরুদ্ধেও অবহেলার অভিযোগ মৃত শিশুর পরিবার থেকে সদস্যদের।এমনকি কর্তব্যরত নার্সকে তাদের শিশুর অবনতির কথা জানালে উল্টে নার্স শিশুর বাবাকে থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে জানাতে বলে দাবি শিশুর বাবা বিজয় কিস্কুর।


পরিবারের তরফে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে কঠর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে চলে সন্ধ্যা থেকে প্রায় রাত দশটা পর্যন্ত বিক্ষোভ।ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিডিও,জয়েন্ট বিডিও থেকে পুলিশ আধিকারিকরা দফায় দফায় হাসপাতালে বিক্ষোভরত মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।এমনকি জয়েন্ট বিডিও অভিজিৎ পোড়িয়াকে হাতজোড় করে বিক্ষোভরত মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যদের বোঝানোর চেষ্টা করেন।শেষমেশ হাসপাতালের বিএমওএইচ ডঃ স্বপ্ননীল মিস্ত্রিকে সাথে নিয়ে হাসপাতালের গেটের সামনে বিক্ষোভরত মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাদের অভিযোগের সমস্তরকম দিক খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হলে তবেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।এবিষয়ে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে বিএমওএইচ ডঃ স্বপ্ননীল মিস্ত্রি জানান,চিকিৎসকের গাফিলতি ছিল না তবে কর্তব্যরত এক নার্সের বিরুদ্ধে রোগীর পরিজনদের দিয়ে জ্বর মাপার অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মৃত শিশুর শারীরিক জটিল সমস্যা ছিল বলে জানান বিএমওএইচ যার জেরে মৃত্যু হয় ওই শিশুর বলে তিনি জানান। এবিষয়ে চন্দ্রকোনা ২ নং ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষ জানান, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে পরিবার,পরিস্থিতি আমরা সামাল দিয়েছি।পরিবারের লোকেদের বলা হয়েছে পুলিশ বা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার জন্য।প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে,এমনকি এবিষয়ে মহকুমাশাসক ও সিএমওএইচকেও জানানো হবে বলে জানান তিনি।এর আগেও বেশ কয়েকবার চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে ফের একই অভিযোগ উঠায় এবং একজন শিশুর প্রান চলে যাওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পরিজন থেকে চন্দ্রকোনাবাসী।