পুরোহিত ছাড়াই পূজিতা হয়ে আসছেন বড় মা

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : এ মায়ের পুজোতে লাগেনা পুরোহিত এখানে আপনিই পুরোহিত। নাম? 'বড়মা'। নামেই নয় দেখতেও বড়, কংক্রিটের তৈরি প্রায় ৪৫ ফুট উচ্চতার কালী মা ভক্তদের কাছে ক্ষীরপাইয়ের বড়মা নামেই পরিচিত।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড চিরকুনডাঙ্গা এলাকায় রয়েছেন কংক্রিটের তৈরি ৪৫ ফুট উচ্চতার বিশালাকার কালী প্রতিমা যা ভক্তদের কাছে 'বড়মা' নামেই পরিচিত। এবছর বড়মায়ের পুজো ২০ বছরে পড়ল। শুধু চন্দ্রকোনা নয় জেলার মানুষও এই কালী মাকে বড়মা নামেই জানে। ক্ষীরপাই এর বড়মার পুজোর অপেক্ষায় থাকে অগনিত মানুষ। পুজোর সময় স্থানীয় আশপাশের মানুষ ছাড়াও জেলার দুরদুরান্তের মানুষও ভিড় জমায় ক্ষীরপাই বড়মার পুজোয়। শ্মশানকালী হলেও এপুজোয় বলি হয় না। সমস্ত রীতি মেনেই এখানে পুজো হয়।পুজোর পরের দিন হাজার হাজার মানুষ আসে মায়ের খিঁচুড়ি প্রসাদ খাওয়ার জন্য।২০ বছর আগে শ্মশানের উপর বড়মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা শুদ্ধদেব রায়।প্রথমে মাটির চালায় পুজো হলেও পরে ৪৫ ফুট উচ্চতার কংক্রিটের মায়ের মুর্তি নির্মান করেন তিনি।যা জেলা কেনো রাজ্যেও এতো বড় মাপের কালী প্রতিমা নেই বলেই মত প্রতিষ্ঠাতা শুদ্ধদেব রায় থেকে অগনিত ভক্তদেরও। 

অমবস্যা তিথি ছাড়া বড়মায়ের মন্দিরে থাকেনা কোনও পূজারী। তিথির সময় ছাড়াও প্রতিদিন প্রচুর মানুষ মায়ের দর্শনে আসেন। তারাই নিজেরাই নিজের মতো করে মায়ের পুজো দিতে পারে পুরোহিত ছাড়াই। ভক্তদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় মন্দিরের পুজো আর্চনার কাজ। যে যার নিজের মতো করে নিজে হাতে পুজো দেয় বড়মাকে। আর এজন্যই প্রতিদিন অসংখ্য ভক্তের সমাগম লেগেই থাকে। বিশালাকার কালী মন্দিরের বৈশিষ্ট্য নজরকাড়ে সকলেরই।যেমন আগত ভক্তদের নিষেধ আছে কোনও রুপ দক্ষিনা না দেওয়ার ক্ষেত্রে,কোনও প্রণামী বক্সের ঠাই নেই মন্দিরে।কোনওরকম আর্থিক সাহায্য করা বা দক্ষিনা হিসাবে কোনও পয়সা দেওয়া যাবে না মন্দিরে, তা বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মন্দির চত্বরে।পুরোহিত ছাড়াই ভক্তরা নিজের মত করে মাকে নিজে হাতে পুজো দিতে পেরে তৃপ্তি পাই বলেই মত আগত ভক্তদের।ক্যালেন্ডার মতে প্রতি অমাবস্যায় পুজো হয় আর এসময়ও দুরদুরান্তের প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় মন্দিরে।অনেক ভক্তের দাবি, মায়ের কাছে মন থেকে কিছু চাইলে তা পূরণ হবেই। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্যও অনেকে মায়ের শ্মরণাপন্ন হয় এবং অনেকের দাবী তাতে বিমুখ হয়নি কেউ।'অর্থের বিনিময়ে নয় নিজে হাতে পুজো করুন মাকে যাচাই করুন 'মন্দীরে লেখা এমনই বানী চোখে পড়বে সকলের।বিশালাকার কংক্রিটের বড় মায়ের এক হাতে রয়েছে পৃথিবী আর এক হাতে রয়েছে সাদা পায়রা,বাকি দুই হাতে কারতান ও মুন্ডচ্ছেদ।সামনে কালী পুজো,পুজোয় জাকজমক না থাকলেও ভক্তদের আরাধনায় প্রতিবছর কালী পুজো গমগম করে ক্ষীরপাইয়ের বড় মায়ের।