দিগ্বিজয় মাহালী: করোনা পরিস্থিতিতে হতাশা নেমে এসেছিল কুমোর পরিবারগুলিতে। সেইসব কাটিয়ে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। কালি পূজায় মাটির সরঞ্জাম, দেওয়ালি পুতুল, হাতি-ঘোড়ার চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গলমহলে এর চাহিদা বেশি। জোগান দিতে হিমশিম খেতে হয় শিল্পীদের। এবারেও চাহিদা অনুযায়ী দেওয়ালি পুতুল তৈরিতে হাত লাগিয়েছে কচিকাঁচারাও। মেদিনীপুর সদরের বেলিয়াতে বেশ কয়েকটি কুমোর বাড়ি রয়েছে। সারা বছর তারা মাটির জিনিস তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করেন। তা থেকেই সংসারের উপার্জন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দেওয়ালি পুতুল বেশি তৈরি হচ্ছে বলে জানান শিল্পী হারাধন দাস, বঙ্কিম দাসরা। বছর পঁয়ষট্টির হারাধন বাবু জানান, পঞ্চাশ বছর ধরে তিনি এই কাজ করে আসছেন। গত বছর পাঁচশটি দেওয়ালি পুতুল তৈরি করেছিলেন। এবছর চাহিদা বেশি থাকায় এক হাজারের বেশি তৈরি করছেন। তবে তার আক্ষেপ পরিশ্রম অনুযায়ী টাকা মেলেনা। বাড়ির ছোট বাচ্চারাও হাত লাগিয়েছে পুতুলে রং দিতে। এবছর দশ হাজার দেওয়ালি তৈরি হয়েছে বেলিয়াতে। সঙ্গে তৈরি হচ্ছে মাটির প্রদীপও। কুমোরদের একমাত্র রোজগারের উপায় মাটির তৈরি জিনিষ। তবে প্রদীপ, দেওয়ালি, হাঁড়ি, সরা, ভাঁড়, ধুনুচির চাহিদা না বাড়লে কুমোর শিল্পীদের জীবন-জীবিকা কিভাবে চলবে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। অপরদিকে জঙ্গলমহলে বাদনা পরবের ধূম। তাতে রোজগারের চেষ্টায় হস্তশিল্পীরা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের বেলিয়াতে বাঁশের তন্তু দিয়ে সামগ্রী বানানোর ব্যস্ততা পরিবারগুলিতে। বছরের এই বিশেষ সময়ে বাদনা পরবে বাঁশের তন্তুর তৈরি কুলা, ডালা, ঝুড়ি লাগে। নতুন কুলা বা ডালা ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে বাদনা পরবের পুরনো রীতিতে। তাই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হস্ত শিল্পীরা এখন রোজগারের চেষ্টায় মশগুল। বাড়ির বাচ্চারাও ব্যস্ত হস্তশিল্প তৈরিতে।