নিজস্ব প্রতিনিধি, লাউদোহা : পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার বালিজুরি গ্রামে আনুমানিক প্রায় ২৫০ বছর ধরে মুক্তকেশী রূপে পূজিত হয়ে আসছেন মা কালী । কথিত আছে জুরি গ্রামের গ্রামের প্রাণপুরুষ তথা প্রতিষ্ঠাতা রাজর্ষি রামকান্ত মুখোপাধ্যায়ের দুই কন্যা ছিল এলোকেশী ও মুক্তকেশী । অনুষ্ঠা কন্যা এলোকেশীর অকাল প্রয়াণের পর তার নামেই গ্রামে মা এলোকেশী রূপে আজও পূজিত হয়ে আসছেন বালিজুরি গ্রামে । তার বড় কন্যা মুক্তকেশীর বিবাহ হয় বর্ধমানের ব্যানার্জি পরিবারে । কথিত আছে একবার মুক্তকেশী কালীপুজোয় বাপের বাড়ি আসতে পারেনি । কেননা মুক্ত কেশীর শ্বশুরবাড়িতেও কালী পুজো চলছিল । সেই সময় রামকান্ত বাবু মুক্তকেশীর শ্বশুরবাড়ির মা কালীর মাটি এনে বালিজুরি গ্রামে এসে মায়ের পুজো শুরু করেন । এর সাথে সাথে রামকান্ত বাবু তার কন্যা এবং জামাতাকেও বালিজুরিতে নিয়ে আসেন। রাজর্ষি রামকান্ত মুখোপাধ্যায়ের বড় কন্যার নামেই শুরু হয় মুক্তকেশী মায়ের পুজো । আজও বালিজুরি গ্রামে মুক্তকেশী রূপে পুজিত হন মা কালী ।
গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারের এক তরুণ সদস্য চন্দ্রচূড় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'বালিজুরি গ্রামের এই মুক্তকেশী মায়ের পুজো প্রাচীনকাল থেকেই ব্যানার্জি পরিবারের পুজো নামেই পরিচিত । অন্যান্য কালির মতো তান্ত্রিক মতে পুজো হয় না এখানে । মুক্তকেশী মায়ের পুজো হয় সম্পূর্ণ বৈদিক মতে । এছাড়াও বালিজুরি গ্রামের এই ব্যানার্জি পরিবারে রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় । বর্তমানে এই মুক্তকেশী কালী সেটি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের পুজো । তাই কালীপুজোর দিন বছরে একবার ব্যানার্জি পরিবারের সকলেই বালিজুরি গ্রামে মায়ের পুজোয় হাজির হন । ছাগ বলিদান প্রথা রয়েছে এই মায়ের পুজোয় । পুজো ঘিরে হয় নরনারায়ন সেবা । এলাকার হাজার খানেক মানুষ মায়ের প্রসাদ খেতে ভিড় জমান এখানে । গ্রামের ছেলে তথা রাজ্যের নামকরা ব্যক্তিত্ব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কালীপুজোয় প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় ।'