নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: সবুজ মাঠে কাশফুলের দোলা, নীল সাদা মেঘে আগমনীর বার্তা। উৎসব প্রিয় বাঙালি মুখিয়ে রয়েছেন চুটিয়ে পুজো উপভোগ করার জন্য। আর সেই আনন্দ অনেকটাই যেন ফিকে হয়েছে জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের। কারণ জঙ্গলে ঠাঁই নিয়েছে হাতির দল। যখন তখন জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে লোকালয়ে চলে আসছে। ধানজমি, অন্যান্য ফসল তছনছ করার পাশাপাশি ঘরবাড়িও ভাঙচুর করছে। গুড়গুড়িপাল থানার কাননডিহি, চাপাশোল, বাঘঘরা, ডালকাটি-সহ বিভিন্ন গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে বিভিন্ন দলে থাকা ৫০ টি হাতির পাল।
বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকায় হানা দিচ্ছে হাতি। হাতির পাল না সরায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। রবিবার শিয়ারবনী বীট অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে যান চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল মাহাতো, মন্টু মাহাতো, সুভাষ মাহাতোরা বলেন, "হাতির পাল এলাকায় জমির ফসল তছনছ করে দিলেও বন দফতর কোনো উদ্যোগ নেয়নি সেভাবে। ক্ষতিপূরণ কবে পাবো তারও ঠিক নেই। বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে হয়েছে।"
তবে হাতির পাল না সরলে রাস্তা অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন সকালে দুটি দাঁতাল চলে আসে কাননডিহি ও বাঘঘরার গ্রামের লোকালয়ে। তাদের মধ্যে লড়াই বাঁধে বলে স্থানীয়রা জানান। আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। হাতি তাড়াতেও দিনরাত এক করে ফেলছেন জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা। হাতিগুলিকে গভীর জঙ্গলে তাড়িয়ে দিলেও পাশের গ্রামে গিয়ে হানা দিচ্ছে। একদিকে ফসল নষ্টের জন্য মন খারাপ, অন্যদিকে যখন তখন হাতির আতঙ্কে ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লক, শালবনী ইত্যাদি এলাকায় ৬০টিরও বেশি হাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও হাতি তাণ্ডব চালাচ্ছে। বনদফতর বা হুলা পার্টি হাতিগুলিকে গভীর জঙ্গলে আবদ্ধ রাখার চেষ্টা করলেও সম্ভব হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই হাতি নিয়ে দুশ্চিন্তা কমছে না এলাকাবাসীর। যদিও বনদফতর নিয়মিত হাতির অবস্থান নিয়ে তথ্য দিয়ে গ্রামবাসীদের সতর্ক করছে।