নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রায় ৪৮ ঘন্টা হতে চললো কুড়মি সমাজের অবরোধ আন্দোলন। ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে চলছে অনির্দিষ্টকালীন রেল অবরোধ এবং জাতীয় সড়ক অবরোধ। একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়গপুর - টাটানগর শাখা। স্তব্ধ খড়গপুর - ঝাড়গ্রাম সড়কপথের যোগাযোগও।
দু'দিনে হাজার হাজার যাত্রীকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তাই, উদ্যোগী হলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব সঞ্জয় বনশল আজ চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রকের সচিব অনিল কুমার ঝা'কে। কুড়মিদের এস.টি (ST) তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি অবিলম্বে 'সর্বাধিক' গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। চিঠির সঙ্গে আদিবাসী কুড়মি সমাজের দাবি সম্বলিত নথিপত্রও পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এরপরই, রাজ্য সরকারের তরফে এই বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্যাবিনেট মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, কুড়মি সমাজের সঙ্গে আলোচনা করে, তাঁদের অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য। শেষ খবর পাওয়া অবধি আলোচনায় বসেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজের বিভিন্ন সংগঠন।
এই বিষয়ে মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেছেন, "আমাদের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ২০১৮ সালে কুড়মি সমাজের দাবি পূরণের বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেয়। বর্তমান পরিস্থিতিতেও কেন্দ্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমি কুড়মি সমাজের নেতা রাজেশ মাহাতোর সঙ্গে কথা বলেছি এবং তার কাছেও চিঠির প্ৰতিলিপি পাঠিয়েছি। আমাদের হাতে এই বিষয়ে কোনও অধিকার নেই । আমরা কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছি। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রের আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের সচিবকে। আমরা দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করেছি আন্দোলন স্থগিত করার। কেন্দ্রর হস্তক্ষেপ ছাড়া আমরা তো কিছুই করতে পারিনা। এই প্রেক্ষাপটে আমরা অনুরোধ করেছি জনজীবন শান্ত হোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে পরবর্তী পর্যায়ে জানানোর জন্য বলেছি"। তিনি কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য বলেন, "পুজোর সময় ট্রেন অবরোধ চললে বাংলার ক্ষতি হয়, অর্থনীতির ক্ষতি হয়। আপনারা এটা বুঝে সহানুভূতির সঙ্গে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিন"।