মানালী দত্ত পাত্র, মুর্শিদাবাদঃ দূর্গাপুজো সকল বাঙালির কাছে অত্যন্ত আবেগপূর্ণ। সারা বছর ছোটো বড় নানান পূজো হলেও দূর্গাপুজোকে ঘিরে প্রতিটি বাঙালির আনন্দ ঘেরা মূহুর্তগুলো অন্যরকম। বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেই নিজের নিজের মত করে গুছিয়ে নেয় পূজোর ৫ টা দিন কিভাবে কাটাবে। কি পড়বে, কোথায় কবে ঠাকুর দেখতে যাবে, খাওয়াদাওয়ার প্ল্যানিং আরো কতকি। আনন্দ থাকলেও সবার তা সমান হয় না। সমাজের এমন কিছু মানুষ আছে যারা পূজোর দিনগুলো চাইলেও অন্য সবার মত কাটাতে পারে না। সবার মত তারাও কাজ করে অন্যের অধীনে। রোদে পুড়ে, জলে ভিজে সময় মত কাজে যেতে হয়। মাসের প্রথমে পাওয়া পারিশ্রমিকে সংসার টানতে নাজেহাল হয়ে যায় তারা। কারোর স্বামী ভ্যান চালায়, কারোর আবার কারখানায় কাজ করে, কারোর আবার ভরসা নিজের কাজের উপরই। পূজোর সময় আলাদা করে ভাবনার কিছু থাকে না। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলী আর নবমীর দিন হেঁটে বা টোটো করে যতটা সম্ভব ঠাকুর দেখে আনন্দ করা। দশমীর দিন এলাকার সকলে মিলে গঙ্গায় গিয়ে ঘন্টাখানের সময় কাটানো বিসর্জনের পালা দেখতে।
সারা বছর কাজ করে একটা দুটো শাড়ী নিজের জন্য কিনে আলমারীতে তুলে রাখা। পুজো এলে ছেলে বা মেয়েদের জন্য স্বামীর জন্য একটা দুটো করে জামা কাপড় কিনে দেওয়া। মাধবী হাজরার বক্তব্য, পরের বাড়ী কাজ করি, ছেলে দুটো ফুলের কাজ করে, যেমন পারি জামা কাপড় কিনি। পূজোর একদিন ঠাকুর দেখে আসি। অঞ্জলী মন্ডলের কথা, অষ্ঠমীর দিন ডালা নিয়ে যায় পূজো দিতে। মেয়ে জামাই আসে ঘুরতে। সেইভাবে যাওয়া হয়না ঠাকুর দেখতে। মাধবী প্রমানিক দু:খের সাথে জানান, মেয়ের বিয়ে হয়েছিল তাকে পুঁড়িয়ে মারে শ্বশুর বাড়ীর লোকে। পরিবারে কেউ নেই। নতুন কাপড় কিছুই হয়না। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে কাপড় দিলে সেগুলো নিতে যায়। কথায় বলে পূজো সবার মধ্যে আনন্দ নিয়ে আসে। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যাদের কাছে বছরের সবকটি দিনই সমান।