দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : হাতির হানায় নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরির দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। তবে, এখনো অনেকে চাকরি পাননি বলে অভিযোগ। তাতেই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শরিকী বিবাদের জেরে এখনও অনেকে চাকরি পাননি। যদিও পরে ওই সমস্যা মিটিয়ে, শরিকদের কোনো আপত্তি নেই জানিয়ে লিখিত জমা দিয়েছেন। এমনই পরিবারের সদস্যরা সোমবার মেদিনীপুর বনবিভাগের ডিএফও অফিসে হাজির হলেন। এর আগেও তারা একাধিকবার বন দফতরের অফিসে ডেপুটেশন এবং যোগাযোগ করে গিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কোন সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। মেদিনীপুর বন বিভাগের লালগড়, পিড়াকাটা, চাঁদড়া রেঞ্জের পনেরো জন এদিন ডিএফও অফিসে হাজির হলেন চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া কত দূর এগিয়েছে জানতে। তারা জানান, ৬৪ জন চাকরি প্রার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৪৭ জন চাকরি পেয়েছেন। বাকি ১৭ জন পাননি। ওই ১৭ জনের পরিবারে সেই সময় শরিকী বিবাদ ছিল। একই পরিবারে বাবা অথবা মা মারা যাওয়ার পর দুই ভাই সেই চাকরির দাবিদার। তা মেটাতে অনেকটা সময় কেটে যায়। পরে বিবাদ মিটিয়ে 'নো অবজেকশন' জানিয়ে বন দফতরে লিখিত জমা দেন। তারপরও দীর্ঘ কয়েক বছর কেটে গেলেও চাকরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত।
লালগড়ের লক্ষণপুরের করমচাঁদ মাহাত বলেন, "আমরা দু'ভাই এবং দিদিও রয়েছে। দিদিরা কোনও দাবি না করলেও দাদাকে তিন লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে 'নো অবজেকশন' জানানোর জন্য। সেই টাকা ঋণ করে দিয়েছি। চাকরি না পেলেও ওই টাকা চাইতেও পারবো না। এইরকম অনেকে জমি বিক্রি করে, ঋণ করে টাকা দিয়ে শরিকি বিবাদ মিটিয়েছে। কিন্তু এখন চাকরি না পাওয়ায় অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে।" গোলকচকের দীননাথ মাহাত বলেন, "আমার দাদু মারা গিয়েছিল। তারপর শরিকি বিবাদ মেটাতে কয়েকদিন সময় লেগে যায়। পরে বন দফতরে যোগাযোগ করলেও এখনও পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি।" তবে সুরাহা না হলে অনশন আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আরেক দাবিদার সুনীল মাহাত বলেন, "মাওবাদী হামলায় নিহত পরিবারগুলিকে বেশ কয়েক দফায় চাকরিতে নিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু হাতির হানায় মৃতের পরিবারগুলির ক্ষেত্রে এক দফায় নিযুক্ত হয়েছে। দ্বিতীয়বার কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাতে দেওয়া হয় তার আবেদন বারবার করে আসছি।"