New Update
দিগ্বিজয় মাহালী, মেদিনীপুরঃ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে হাতির পালকে সরাতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন হুলা টিমের সদস্য সহ বনাধিকারিকরা। মারমুখী জনতার তাড়ায় বাঁচতে ডোবার জল পেরিয়ে ছুটলেন অন্ধকারময় গভীর জঙ্গল পথে। ঘটনাটি শনিবার রাত আটটা নাগাদ শালবনীর গোলকচক এলাকায়। খবর পেয়ে পৌঁছায় পিড়াকাটা ফাঁড়ির পুলিশ।
গত তিনদিন ধরে ৭০ থেকে ৮০ টি হাতি মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ১২ সেপ্টেম্বর জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে হাতির পালকে বাঁকুড়া পাঠানোর জন্য তৎপর বনদপ্তর। চাঁদড়া, মেদিনীপুর, গোদাপিয়াশাল, পিড়াকাটা সহ বিভিন্ন রেঞ্জের আধিকারিকরা উপস্থিত হন হাতির পালকে সরানোর জন্য।
রাতে চাঁদড়ার জঙ্গল রাস্তায় দেখা গিয়েছে মেদিনীপুর বনবিভাগের এডিএফও বিজয় চক্রবর্তী ও শুভাষীস ঘোষকে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আনা হয়েছে হুলা টিম। শনিবার প্রায় দেড়শোজন হুলা টিমের সদস্য ছিল। হুলা টিমের সদস্যদের সঙ্গে গভীর জঙ্গলে হাঁটতে দেখা গিয়েছে চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা ও মেদিনীপুর রেঞ্জের আধিকারিকদের পাপন মহান্তকে। শনিবার বিকেলে হাতির পাল চাঁদড়া রেঞ্জের আউশাবাঁধি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গোলকচক এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয়রা হুলা টিমের সদস্যদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। হুলা টিমের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা ও মেদিনীপুর রেঞ্জের আধিকারিক পাপন মহান্ত। অভিযোগ, তাঁদের দেখতে পেয়ে তাড়া করে নিয়ে আসে কয়েকজন। মারধর করতে উদ্যত হয় বলেও অভিযোগ।
বাঁচতে কোনোরকমে দুই আধিকারিক জল ভর্তি ডোবা পেরিয়ে অন্ধকারের মধ্যে জঙ্গল পথ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে বাঁচেন। পায়ে আঘাত পান পাপন মহান্ত। জলে ডুবে ফোন নষ্ট হয় সুজিত পন্ডার। পরে পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর গেলে পৌঁছায় পুলিশ কর্মীরা। শুক্রবার রাতেও মেদিনীপুর সদরের নয়াগ্রামে হাতির পাল পৌঁছালে হুলা টিমের সদস্যদের লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। তাতে কয়েকজন আঘাত পেয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে যেতে হয় গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশকে। এর আগেও বহুবার বনকর্মী ও হুলা টিমের সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে বারবার হুলা টিমের সদস্যরা আক্রান্ত হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা। বনদপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বলে তাঁরা জানান। এদিন বনাধিকারিকদের হেনস্থার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বনদপ্তরে সূত্রে জানা গিয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।