কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ

author-image
Harmeet
New Update
কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুর : পূর্ব মেদিনীপুর গ্রাহক পরিষেবার নামে পাঁচ কোটির প্রতারণা। গুজরাটের আমেদাবাদ থেকে প্রতারককে ধরল সিআইডি।   কোলাঘাট ব্লকের অন্তর্গত খানজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা অমিত সাহু, দীর্ঘদিন ধরেই একটি রাষ্টায়ত্ত ব‍্যাঙ্কের দুটি সিএসপি শাখা খুলেছিল কোলাঘাট ব্লকের শ্রীকৃষ্ণপুর ও তমলুক ব্লকের পোনান গ্ৰামে। প্রতারিতদের অভিযোগ, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে সিএসপি কেন্দ্রগুলি নিজেই চালাচ্ছিল অমিত। প্রথম দিকে গ্রাহকদের সাথে অমিত খুব ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলে । ফলে প্রতিদিনের পরিশ্রমের টাকা বিশ্বাসের সাথে ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে জমা রাখতেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। বেশ কয়েক বছর ধরে টাকা লেনদেন চলছিল সুষ্ঠুভাবে। পরে গ্রাহকরা স্থানীয় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মেন শাখায় গিয়ে তাদের সঞ্চিত টাকার অ্যামাউন্ট জানতে চাইলে তাদেরকে বলা হয় যে তাদের অ্যাকাউন্টে যৎসামান্যই টাকা রয়েছে। ফলে মাথায় হাত পড়েছে ওই দুই গ্রামের খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষদের ।


প্রতারিতদের অভিযোগ, বছর খানেক ধরে তারা বুঝতে পারে যে তারা প্রতারণার স্বীকার হয়েছে। তাদের অভিযোগ, আধার কার্ডে আঙুলের ছাপ দিয়ে বেশি করে টাকা তুলে নিতেন অভিযুক্ত অমিত।এরপর বাড়ি থেকে প্রিন্ট করে আনতেন পাশ বই। দু তিনটি গ্রাম মিলিয়ে মোট দুশোরও বেশি অ্যাকাউন্ট ছিল ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে। মোট পাঁচ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে অমিত সাহুর বিরুদ্ধে । টাকা ফেরত চেয়ে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মূল ব্রাঞ্চে গিয়ে ম্যানেজারের দ্বারস্থ হন গ্রাহকরা। ম্যানেজার আইনগত প্রক্রিয়ায় গ্রাহকদের টাকা ফেরতের আশ্বাস দেন । গত মে মাসে প্রতারিত ব‍্যাক্তিরা গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক অমিত সাহুর নামে কোলাঘাট ও তমলুক দুটি থানাতে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্ত ভার যায় সিআইডির হাতে। সুযোগ বুঝে বাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যায় অমিত। দীর্ঘ তদন্তের পর গত ৩ সেপ্টেম্বর গুজরাটের আমেদাবাদ থেকে অমিতকে গ্রেফতার করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিআইডি। ৬ সেপ্টেম্বর আমেদাবাদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ট্রানজিট রিমান্ডে তমলুক নিয়ে আসা হয় ধৃত ওই ব্যক্তিকে । গতকাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে অমিতকে তোলা হলে ৮ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পোনান, শ্রীকৃষ্ণপুর, খানজাদাপুর, সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের দুস্থ মানুষ যারা অমিতের ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে টাকা রেখেছিলেন এবং প্রতারিত হয়েছেন, তাদের দাবি, দ্রুত টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।