নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়ে অবাধে চুরি হচ্ছে মূল্যবান স্ফটিক পাথর!

author-image
New Update
নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়ে অবাধে চুরি হচ্ছে মূল্যবান স্ফটিক পাথর!

রাহুল পাসোয়ান, আসানসোল: নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়ে অবাধে চুরি হচ্ছে মূল্যবান স্ফটিক পাথর। এই অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের। 

সালানপুর ব্লকের মাইথন ড্যাম সংলগ্ন এলাকায় শুধু যে মূল্যবান খনিজ সম্পদ চুরি হচ্ছে তা নয়, ভূমিক্ষয়ও হচ্ছে লাগামছাড়া। নদী বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এরকম চলতে থাকলে বরাকর নদের ভাঙন অনিবার্য। গ্রামগুলিও অতিবর্ষায় বানভাসি হতে থাকবে। গবেষক ও নদী বিশেষজ্ঞ জয়া মিত্র বলেন, নদীর পাড়ের বাঁধন ধরে রাখে এই সাদা পাথর। তোলার ফলে সমতল জমির যেখানে- সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। ফলে নদীর পাড় ভেঙে যায়। জলস্তর বাড়লে বন্যা হতে পারে বা জলাধারের ধারে বড়বড় গাছও মাটি সমেত উপড়ে পড়তে পারে।

সালানপুরের দেন্দুয়া ও আল্লাডি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মাইথন ড্যামের উল্টো প্রান্তের নদের পাড় লাগোয়া এলাকায় গেলে দেখা মিলবে মাটি খুঁড়ে কোয়ার্জ বা স্ফটিক পাথর তুলে সারসার জমা করে রাখা আছে। সিদাবাড়ি, বাথানবাড়ি, হদলাকালীপাথরঅঞ্চলে এই কাজে জড়িত রয়েছেন কয়েকশো মানুষ। নদী পারের উপরিভাগের লাল মাটি কয়েক ফুট কেটে নেওয়ার পরেই এবড়ো-খেবড়ো সাদা পাথরের স্তর বেরিয়ে আসে। এর পরে সেই পাথরের স্তর শাবল দিয়ে ভেঙে টুকরো করে এক জায়গায় জড়ো করা হয়। পরে সুবিধা মতো সেই পাথর গাড়িতে চাপিয়ে পাচার হয়ে যায় ভিন জেলায় বা ঝাড়খণ্ড হয়ে ভিনরাজ্যে।

জানা গেছে ঝুড়ি পিছু ১০০ টাকা মজুরিতে এই পাথর তোলার কাজ করেন স্থানীয়ার। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঝুড়ি পাথর তুলতে পারলেই আয় দৈনিক প্রায় ৫০০ টাকা করে। ক্রাশারে এই সাদা পাথর গুঁড়ো বস্তাবন্দি করে নানা জায়গায় পাচার করা হয়। এই পাথর সিরামিক ও টাইলস তৈরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া মার্বেল ও মার্বেল সামগ্রী পালিশের কাজেও ব্যবহৃত হয়। আজকাল অ্যাকোয়ারিয়ামের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও এই পাথর বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়।

পুলিশের দাবি চোরাই কারবার রোখার জন্য তাঁরা মাঝে মাঝে অভিযান চালান। কয়েকদিন আগেই রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশ এক ডাম্পার পাথর আটক করে। পুলিশের দাবি মাইথন ড্যাম সংলগ্ন কয়লা বাদ দিয়ে অন্য খনিজ সম্পদের এক্তিয়ার রয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকারের হাতে। ফলে আইনের ফাঁকগলে এই চোরাচালান চালাচ্ছে একদল চোরাকারবারী।