নবান্ন থেকে বিকাশ ভবন ঘুরেও হয়নি লাভ! স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড না পেয়ে পড়ুয়ার আত্মহত্যার চেষ্টা

author-image
Harmeet
New Update
নবান্ন থেকে বিকাশ ভবন ঘুরেও হয়নি লাভ! স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড না পেয়ে পড়ুয়ার আত্মহত্যার চেষ্টা
দিগ্বিজয় মাহালী, মেদিনীপুরঃ বিষ খেয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লাড়ছে তিথি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আশা খুবই কম। কিন্তু তিথি কেন বিষ খেল? পরিবার ও এলাকার সমস্ত মানুষজনই জানাচ্ছেন, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে না পাওয়ার জন্যই তিথি বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ভেয়েরবাজার এলাকার জয়দেব দোলই ও রিঙ্কু দোলই-এর একমাত্র মেয়ে তিথি দোলই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পর ব্যাঙ্গালোরে একটি নার্সিং কলেজে ভর্তি হয়। জানা যায়, ভর্তি হওয়ার সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয় যে তার পড়া সম্পূর্ণ করতে খরচ পড়বে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা।


ভর্তির সময় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তিথি এক লক্ষ টাকা জমা দিয়ে কলেজে ক্লাস শুরু করে। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে আবেদন করার কারণে তিথি ও তার বাবা-মা ভেবেছিল ব্যাংকের মাধ্যমে লোন পেয়ে যাবেন। কিন্তু সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি জমা দিলেও একাধিকবার ব্যাঙ্কে ঘুরেও লোন না পেয়ে মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে তিথি। তিথির মা রিঙ্কু দোলই বলেন, "নবান্ন থেকে শুরু করে বিকাশ ভবন, একাধিকবার আমার মেয়েটা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য গিয়েছে। এমনকি ব্যাঙ্কেও গিয়েছি। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছে। আর এদিকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষার আগে তাকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দিতে হবে। তা না হলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না।" 

কলেজের সেই নিয়ম অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করার অর্থ সংগ্রহ করতে পারেননি তাঁরা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছে তিথিকে। তাই মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করার পথ বেছে নিয়েছে বলে পরিবারের দাবি। রবিবার রাতে তিথি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করা চেষ্টা করে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তিথিকে। এলাকার মানুষের দাবি, যেখানে সরকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করেছে সেখানে কেন ছাত্রছাত্রীরা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পাবে না? যদিও এ বিষয়ে চন্দ্রকোনা স্টেট ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সান্টু কুমারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিথির তথ্য সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি থাকার জন্যই তাকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট পরিষেবাটি দেওয়া হয়নি। এমনকি এডমিশন লেটার অন্য কলেজ আর ফি সংক্রান্ত স্ট্রাকচারে অন্য কলেজের তথ্য থাকায় কী করে এই পরিষেবা দেওয়া সম্ভব বলেও জানান ব্যাঙ্কের ম্যানেজার।