বাংলাদেশ জুড়ে উদযাপিত হচ্ছে রাখি বন্ধন

author-image
Harmeet
New Update
বাংলাদেশ জুড়ে উদযাপিত হচ্ছে রাখি বন্ধন

হাবিবুর রহমান, ঢাকাঃ হিন্দুদের বারো মাসে তের পার্বণ। তার মধ্যে একটি অন্যতম উৎসব হল রাখি পূর্ণিমা বা রাখিবন্ধন। আজ সেই রাখি পূর্ণিমায় মেতেছে বাংলাদেশ। গোটা বাংলাদেশ জুড়ে উদযাপিত হচ্ছে রাখি পূর্ণিমা বা রাখিবন্ধন। হিন্দু ধর্মে, রাখিবন্ধন উৎসব ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। ভাই-বোনের অমূল্য সম্পর্ককে অটুট রাখে রাখি। ভাইকে ভালোবেসে তার হাতে রাখি বাঁধে বোন। আর সারাজীবন বোনকে নিরাপদে রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় ভাই। এভাবেই রক্তের সম্পর্ক ও ভালোবাসা নিবিড় হয়। রাখিবন্ধনের দিনে বোনরা তাদের ভাইয়ের কাছ থেকে উপহারও পায় এবং ভাই-বোন পরস্পরকে মিষ্টি খাওয়ায়। দীর্ঘকাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে এই প্রথা।





মহাভারতে আছে, একটি যুদ্ধের কৃষ্ণের কবজিতে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হলে পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এতে কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে যান। দ্রৌপদী তাঁর অনাত্মীয়া হলেও, তিনি দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন এবং দ্রৌপদীকে এর প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বহু বছর পরে, পাশাখেলায় কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করে তাঁর বস্ত্রহরণ করতে গেলে কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে সেই প্রতিদান দেন। এইভাবেই রাখিবন্ধনের প্রচলন হয়।
এই রাখিকে আসলে শুভ শক্তির প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, যুদ্ধে যাওয়ার আগেও রাখি বাঁধা হতো। ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহামতি আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করলে আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোজানা রাজা পুরুকে একটি পবিত্র সুতো পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করেন আলেকজান্ডারের ক্ষতি না করার জন্য। পুরু ছিলেন কাটোচ রাজা। তিনি রাখিকে সম্মান করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি নিজে আলেকজান্ডারকে আঘাত করেননি। যুগ যুগ ধরে রাখিবন্ধনের এ দিনে বোন তার ভাইয়ের হাতে পবিত্র রাখি পরিয়ে আসছেন এবং ভাই তার বোনের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেন সারা জীবনের জন্য।