দিগ্বিজয় মাহালী, মেদিনীপুরঃ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের তিরোধান দিবসে খাওয়া দাওয়ার অনুষ্ঠান বন্ধ করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস।
১৩ শ্রাবণ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তিরোধান দিবস। এই তিরোধান দিবসে বছরের পর বছর ধরে বীরসিংহ ভগবতী উচ্চ বিদ্যালয়ে নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়। বিদ্যাসাগরের তিরোধান দিবস উপলক্ষে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়েছিল বীরসিংহ গ্রামে কয়েকদিন আগে। সেই প্রস্তুতি সভায় ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তিরোধান দিবসে নরনারায়ণ সেবা অর্থাৎ খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানটি যেন বন্ধ করা হয়। মহকুমা শাসকের দাবি, মৃত্যুদিনে খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানটি বেমানান। তাই বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত আলোচনা প্রসঙ্গগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক।
তার সাথে এই খাবারের অনুষ্ঠানটিকে বন্ধ রাখা হোক। এই খবর এলাকাবাসীর কাছে পৌঁছানোর পরই বীরসিংহ বিদ্যাসাগর ভগবতী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবি, বিদ্যাসাগর মহাশয় গরীবদের মুখে অন্ন তুলে দিতে ভালোবাসতেন। শতাধিক বছর ধরে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তিরোধান দিবসে বীরসিংহ গ্রামের পাশাপাশি প্রায় ৫-৭ টি গ্রামের মানুষ বিদ্যাসাগরের মৃত্যুদিনে বিদ্যাসাগরের জন্ম ভূমিতে এসে খিচুড়ি ভোগ গ্রহণ করেন। তাই খিচুড়ি ভোগের অনুষ্ঠানটি বন্ধ করা যাবে না। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস সহ স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্য, প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্যরা দীর্ঘক্ষণ গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু গ্রামবাসীরা তাদের দাবিতে অনড়।
শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের না বোঝাতে পেরে পুরো বিষয়টি গ্রামবাসীদের উপরই ছেড়ে দেন ঘাটালের মহকুমাশাসক। শুধু তাই নয়, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আবেগ নিয়ে তিনি কেঁদেও ফেলেন। এ বিষয়ে ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমনবাবু কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। এলাকাবাসীর দাবি মেনে খুব ছোট আকারের খিচুড়ি ভোগ বিতরণ করা হবে বলে বীরসিংহ বিদ্যাসাগর ভগবতী উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে খবর।