হাবিবুর রহমান, ঢাকাঃ প্রথমে করোনাভাইরাসের আক্রমণ। তারপর ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। এই দুইয়ের ফলে বিশ্ব এখন হাঁসফাঁস করছে। দেশে দেশে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বৈদেশিক রিজার্ভে হাত পড়েছে। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। জীবনের পরোয়া করছেন না তারা। এ পরিস্থিতির প্রমাণ হয়ে গেছে পাশের দেশ শ্রীলঙ্কায়। সেখানে মানুষ বন্দুকের ভয় করছে না। গুলির ভয় করছে না।
বিক্ষোভ হয়েছে আরও অনেক দেশে। মুদ্রাস্ফীতির ফলে তারা অসহায়। বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর দাম। কিন্তু বাড়ছে না আয়। এমনকি সারাবিশ্বে করোনা মহামারির সময় থেকেই বিপুল পরিমাণ মানুষ কর্মহীন। সারাজীবন তারা যা জমিয়েছিলেন ভবিষ্যতের জন্য, তা ভেঙে খেয়েছেন অথবা তা শেষ হয়ে গেছে, বা শেষ হওয়ার পথে। তাদের হাতে আর কোনো বিকল্প নেই। এমন অবস্থা ঠাহর করতে পেরে সুদের হার বাড়িয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এখন নতুন করে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা জোরালো হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে মনিটারি পলিসি বা অর্থ সংক্রান্ত নীতি কঠোর করেছে সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইন। তাদের এমন উদ্যোগ বিস্ময়কর।
এদিকে মার্কিন মুদ্রা ডলারের দাম বেড়েই চলছে। বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার এক দিনে ৫০ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলারের জন্য ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। এই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে। এরপরও ডলারের সংকট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্যদিকে রপ্তানি আয় বাড়লেও কমেছে প্রবাসী আয়। ফলে দেখা দিয়েছে ডলারের সংকট। ডলারের এই তীব্র সংকটের কারণে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতেও চরম সংকটে পড়েছে দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ব্যাংকগুলোও ঋণপত্র খোলার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জ্বালানিসহ বিভিন্ন অতি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, জ্বালানি তেল আমদানি করতে ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খোলা যাচ্ছে না। তেল সরবরাহকারী বিদেশি সংস্থার পাওনা পরিশোধ নিয়মিত হচ্ছে না।