হরি ঘোষ, দুর্গাপুর: মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত অমরনাথ যাত্রা। লন্ডভন্ড অমরনাথ গুহার সামনের এলাকা। আশেপাশে 'ভাগো ভাগো চিৎকার'। হাজার হাজার যাত্রী দিশাহীন। অমরনাথ যাত্রায় এই ঘটনা সামনে থেকে দেখে দুর্গাপুরে ফিরলেন ৯ বন্ধু।
ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। ভয়ের ছাপ চোখে মুখে নিয়ে দুর্গাপুরে ফিরল একটি দল। সুরজিৎ নন্দা নামে এক বন্ধুর পায়ে গুরুতর চোট পাওয়ায় গতকাল বিমানে করে ফিরেছেন দুর্গাপুরে। মনের মতো করে অমরনাথ দর্শন না হলেও, ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন দুর্গাপুরের মনোরঞ্জন খাঁ, কৌশিক মুখার্জি, অসীম নন্দী, গৌতম চ্যাটার্জি, তীর্থ মুখার্জি, অভয় হিরা, প্রদীপ চৌধুরী, সঞ্জীব বারুই ও সুরজিৎ নন্দা দুর্গাপুরের বি-জোন ও সেপকোর বাসিন্দা। ৩ জুলাই ট্রেনে করে শুরু হয়েছিল যাত্রা।
৫ তারিখে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার প্রথমেই রামবন এলাকায় ধসের কবলে পড়ে এই যাত্রীদের গাড়ি৷ সেনার তরফে ছাউনিতে সমস্ত যাত্রীদের রাখা হয়। ৬ তারিখ তাঁরা কাশ্মীরে পেহেলগাঁও পৌঁছান। এরপর ৭ তারিখ অমরনাথ যাত্রা শুরু করা ও ৮ তারিখ টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে অমরনাথ দর্শনের জন্য গুহার সামনে পৌঁছায় ৯ বন্ধু।
গুহার সামনে যেতেই মেঘভাঙা বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সব। নিমেষের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় হতবাক যাত্রীরা৷ কী করবে তা বুঝতে না পেরে সাধারণ মানুষ দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছিল লঙ্গরখানা, অস্থায়ী টেন্ট, হাজার হাজার মানুষের এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি, কোথায় যাবে তার কোনো সঠিক ঠিকানা জানা নেই। তারই মধ্যে 'ভাগো ভাগো' শব্দে কানে আসছে সেনাবাহিনীর তরফে। এ মতো অবস্থায় মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছে বলে দাবি ৯ বন্ধুর।
এই পরিস্থিতিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল বন্ধুরাও। তেমনভাবে ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। প্রায় ৩ ঘন্টা পর আবার বন্ধুদের এক সঙ্গে দেখা হয়। সুরজিৎ নন্দা বললেন, এক বন্ধু পাথরের চোট পাওয়ায় গুরুতর আহত হয়। বুধবার দুর্গাপুরে ফিরে এসে আতঙ্কের ছাপ চোখে মুখে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তবে পরিবারের কাছে ফিরতে পেরে খুশি। আগামী দিনে আবারও অমরনাথ যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে বলে সকলেই আশা প্রকাশ করেন।