সুজিত গৌড়, হুগলী : ৬২৬ বছরে পা দিল মহেশের রথযাত্রা। শ্রীরামপুরে সকাল থেকেই ভক্তদের ভিড় দেখা যায় মাহেশের মন্দির চত্বরে। গর্ভগৃহ থেকে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে মন্দির প্রাঙ্গণের বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে ভক্তদের জন্য। সেখানেই চলছে পুজোপাঠ। পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের দীর্ঘ লাইন পরে মন্দিরে। প্রথা অনুযায়ী, স্নান যাত্রার পর মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকে। ওই সময় জগন্নাথদেবের জ্বর আসে। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর সারার পর হয় নবযৌবন। রাজবেশে সাজানো হয় তিন দেবতাকে, রাখা হয় রুপোর হাত।
রথের দিন ভোরে ভোগ গ্রহনের পর ভক্তদের সামনে আসেন জগন্নাথ। সারাদিন ধরে চলে পুজোপাঠ। নারায়নই যেহেতু কলিকালের জগন্নাথ সেই কারণে নারায়ন শিলাকে প্রথমে রথে তোলা হয়। তারপর তোলা হয় সুভদ্রা,বলভদ্র ও জগন্নাথকে। বিকেল চারটের পরে রথের দড়িতে টান হয়। মাহেশের রথ ম্যানিলা দড়ি দিয়ে টানা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। মার্টিন বার্ন কোম্পানির তৈরি লোহার রথের বয়স ১৩৭ বছর। মাহেশে আগে ছিলো কাঠের রথ। করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে গত দুবছর রথযাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছিল।এবার রথযাত্রা হচ্ছে মহা সমারোহে।
প্রথা অনুযায়ী তোপধ্বনি দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রা। এই রথ ৫০ ফুট উচ্চতার, লোহার বারোটি চাকা রয়েছে। ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম রথযাত্রা হল মাহেশের এই রথযাত্রা। কলকাতার শ্যামবাজারের বসু পরিবার রথ তৈরি করে দিয়েছিল। সেই ১২৫ টনের সেই লোহার রথের চাকা গড়াবে রাজপথে। আর আওয়াজ ওঠে জয় জগন্নাথ, জয় জগন্নাথ, জয় জগন্নাথ।দুবছর পরে রথের চাকা গড়াবে তাই ভক্তদের ঢল নামে মাহেশে।পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেডিকেল ক্যাম্প,এ্যাম্বুলেন্স দলকম মোতায়েন থাকবে। পানিহাটির দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশ পথে এবং রাস্তার পাশে ব্যারিকেড করা থাকবে। রথের সামনে দুটি তামার ঘোড়া ও একটি সারথি থাকে।